বেলুচিস্তানে ঈদে মিলাদুন্নবীর শোভাযাত্রা শুরুর আগে আত্মঘাতী বোমা হামলা, নিহত অন্তত ৫২

মাসতুং জেলার সহকারী কমিশনার (এসি) আত্তাহুল মুনিম জানান, আজ শুক্রবার আলফালাহ সড়কের মদিনা মসজিদের কাছে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করতে মুসুল্লীরা জমায়েত হন। এর কিছু সময় পর বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
বেলুচিস্তানে আত্মঘাতি বোমা হামলায় আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স
বেলুচিস্তানে আত্মঘাতি বোমা হামলায় আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের মাসতুং জেলার এক মসজিদের কাছে আত্মঘাতী বোমা হামলায় পুলিশের এক কর্মকর্তাসহ অন্তত ৫২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৫০ জনেরও বেশি।

আজ শুক্রবার পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন এই তথ্য জানায়।

মাসতুং জেলার সহকারী কমিশনার (এসি) আত্তাহুল মুনিম জানান, আজ শুক্রবার আলফালাহ সড়কের মদিনা মসজিদের কাছে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করতে মুসুল্লীরা জমায়েত হন। এর কিছু সময় পর বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

এখনো এই হামলার দায় নেয়নি কোনো জঙ্গি সংগঠন। 

জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ডিএইচও) আবদুল রাজ্জাক শাহি হতাহতের বিষয়টি ডনকে নিশ্চিত করেন।

সিটি স্টেশন হাউজ কর্মকর্তা (এসএইচও) মোহাম্মাদ জাভেদ লেহরি জানান, মৃতদের মধ্যে এক পুলিশ কর্মকর্তাও আছেন। তিনি এই বিস্ফোরণকে 'আত্মঘাতী হামলা' বলে অভিহিত করেন।

মাসতুং এর এসি মুনিম উল্লেখ করেন, পুলিশের ডেপুটি সুপার নাওয়াজ গিশকোরির গাড়ির কাছে এই বিস্ফোরণ ঘটে। এই কর্মকর্তার দায়িত্ব ছিল শোভাযাত্রার পাশে থেকে গাড়ি নিয়ে আগানো ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। 

বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলের কিছু ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, বেশ কিছু রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে আছে এবং তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতবিক্ষত হয়ে আছে।

তবে এই ছবি ও ভিডিওগুলোর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি ডন।

হাসপাতালের বাইরে জমায়েত হন অনেক মানুষ। ছবি: রয়টার্স
হাসপাতালের বাইরে জমায়েত হন অনেক মানুষ। ছবি: রয়টার্স

বেলুচিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন তথ্যমন্ত্রী জান আচাকযাই জানান, উদ্ধারকর্মীরা মাসতুং এর উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। গুরুতর আহত ব্যক্তিদের কোয়েটায় স্থানান্তর করা হয়েছে এবং সব হাসপাতালে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

আচাকযাই বলেন, 'শত্রুরা বিদেশী শক্তির আশীর্বাদ নিয়ে বেলুচিস্তানের ধর্মীয় সহনশীলতা ও শান্তি নষ্ট করতে চায়। এই বিস্ফোরণের ঘটনা সহ্য করার মতো নয়।'

তিনি আরও জানান, তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রী আলি মারদান দমকি এ ঘটনার নেপথ্যের অপরাধীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন।

শাহীদ নাওয়াব ঘৌস বাকশ রাইসানি মেমোরিয়াল হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী ড. সাঈদ মিরওয়ানী ডনকে জানান, ৩৪ জন নিহত ও ১৩০ জনেরও বেশ আহত হন।

শাহী বিষয়টি পরিষ্কার করে বলেন, একই ব্যক্তিকে দুই হাসপাতালের ডবল এন্ট্রির কারণে হতাহতের সংখ্যায় তারতম্য দেখা যায় এবং আহতের সংখ্যা ৫০।

ড. মিরওয়ানী নিশ্চিত করেন, তার হাসপাতালে ২৮টি মরদেহ আনা হয়েছে এবং ২২ জনের মরদেহ মাসতুং জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

তিনি জানান, বেশ কয়েক ডজন মানুষ তার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে এবং ২০ জন আহত ব্যক্তিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কোয়েটায় পাঠানো হয়েছে।

Comments