দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে সমলিঙ্গের বিয়ের স্বীকৃতি দিলো থাইল্যান্ড

থাইল্যান্ডের এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের সদস্যরা ৪ জুন প্রাইড মার্চে অংশ নেন। ফাইল ছবি: এএফপি
থাইল্যান্ডের এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের সদস্যরা ৪ জুন প্রাইড মার্চে অংশ নেন। ফাইল ছবি: এএফপি

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে সমলিঙ্গের বিয়ের আইনি স্বীকৃতি দিয়েছে থাইল্যান্ড। দেশটির পার্লামেন্টে আয়োজিত ভোটে এই প্রস্তাব পাস হয়েছে।  

আজ মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি। 

থাই পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ সিনেট ১৩০ বনাম চার ভোটে এই প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। ১৮ জন আইনপ্রণেতা ভোটদানে বিরত থাকেন।

পার্লামেন্টের এই সিদ্ধান্তের ফলে থাইল্যান্ডের বৈবাহিক সম্পর্কের আইনে পরিবর্তন আসবে। ভবিষ্যতে, একজন থাই পুরুষ অপর এক পুরুষকে এবং থাই নারী অপর নারীকে বিয়ে করতে পারবেন।

তবে তার আগে এই আইন দেশটির রাজা মহা ভাজিরালংকর্নের কাছে পাঠানো হবে। তিনি এতে সম্মতি দিলে রাজার কার্যালয় থেকে একটি আনুষ্ঠানিক গ্যাজেট প্রকাশ করা হবে। গ্যাজেট প্রকাশের ১২০ দিন পর এই আইন চালু হবে।

এর আগে এশিয়ার অপর দুই দেশ তাইওয়ান ও নেপাল সমলিঙ্গের বিয়ের আইনি স্বীকৃতি দিয়েছে।

থাই পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ সিনেটে সমলিঙ্গের বিয়ের আইনি অধিকার নিয়ে ভোট চলছে। ছবি: এএফপি
থাই পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ সিনেটে সমলিঙ্গের বিয়ের আইনি অধিকার নিয়ে ভোট চলছে। ছবি: এএফপি

থাইল্যান্ডে সমলিঙ্গের বিয়ের অধিকার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যারা আন্দোলন করছেন, তারা আশা করছেন অক্টোবর নাগাদ এই আইন চালু হবে। 

এলজিবিটিকিউ অধিকারকর্মী ও এই আইনের নিরীক্ষাকারী কমিটির সদস্য প্লাইফা কিয়োকা শোদলাদ বলেন, 'আমরা এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে গর্বিত। আপনারা সবাই একটি বড় পরিবর্তন আনতে সহায়তা করেছেন।'

'আজ ভালোবাসার জয় হয়েছে', যোগ করেন তিনি।

থাই প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল মুভ ফরোয়ার্ড পার্টির আইনপ্রণেতা তুনিয়াওয়াজ কামোলোয়াংওয়াত বলেন, আইনের এই পরিবর্তনে 'জনগণের জয় হয়েছে।'

নতুন এই আইনের ফলে বিবাহের নথিতে 'পুরুষ', 'নারী', 'স্বামী' ও 'স্ত্রী'র মতো শব্দের বদলে লিঙ্গ নিরপেক্ষ শব্দ ব্যবহার করা হবে।

এই আইন পাসের পর উত্তরাধিকার বা সন্তান দত্তক নেওয়ার ক্ষেত্রে সমলিঙ্গের দম্পতিরা নারী-পুরুষ দম্পতির সমান অধিকার পাবেন।

থাই পার্লামেন্টে ভোটের আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিচ্ছে এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদলের নেতা। ছবি: এএফপি
থাই পার্লামেন্টে ভোটের আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিচ্ছে এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদলের নেতা। ছবি: এএফপি

থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন এই আইনের সমর্থনে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন। তিনি তার আনুষ্ঠানিক বাসভবনে এই আইন পাসের পর উৎসবের আয়োজন করবেন বলে জানিয়েছেন।

বিশ্বে ৩০টির বেশি দেশে সমলিঙ্গের বিয়ে আইনি স্বীকৃতি পেয়েছে। ২০০১ সালে নেদারল্যান্ডে প্রথম সমলিঙ্গ দম্পতি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিল। 

পার্লামেন্টের এই উদ্যোগ তরুণদের কাছে প্রশংসিত হলেও থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ-ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ এখনো প্রথাগত ও রক্ষণশীল ধ্যানধারণায় বিশ্বাসী।

এই সম্প্রদায়ের সদস্যরা এএফপিকে জানান, এই আইন চালু হলেও তারা দৈনন্দিন জীবনে নানা বাধা ও বৈষম্যের শিকার হতে থাকবেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

NCP to announce 'July manifesto' on Aug 3: Nahid

Central NCP leaders held a rally in Bogura today as part of their month-long "July March to Build the Nation" rally

1h ago