সীতাকুণ্ডের অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ 

আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন প্রবেশ লাল, পা হারালেন মাসুদ

বিস্ফোরণস্থল এখন ধ্বংসস্তূপ। ছবি: রাজিব রায়হান/স্টার

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের কম্প্রেসর অপারেটর প্রবেশ লাল শর্মা (৪১) মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।

বিস্ফোরণে মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়া প্রবেশ লালের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। তার অবস্থা 'খুবই সংকটাপন্ন' বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

২ ছেলেমেয়ের জনক প্রবেশ লাল সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের বাসিন্দা।

আজ রোববার সকালে হাসপাতালের আইসিইউয়ের সামনে উদ্বিগ্ন বসে থাকতে দেখা যায় প্রবেশ লালের স্ত্রী সীমা শর্মাকে। তিনি বলেন, 'আমার স্বামীর অবস্থা ভালো না। ছেলে এইচএসসির শিক্ষার্থী, মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। সংসারে ওদের বাবাই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। জানি না ভবিষ্যতে আমাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে।'

প্রবেশ লালের ভাই নয়ন শর্মা জানান, তার ভাই ২০ বছর ধরে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে কাজ করছেন। কিন্তু কারখানা থেকে এখন পর্যন্ত কেউ তাকে দেখতে আসেনি।

নয়ন শর্মা বলেন, 'আমরা কারখানা থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি। শনিবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা দেওয়া হলেও ওষুধ ও অন্যান্য কাজে আমরা ইতোমধ্যে ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করে ফেলেছি।'

এদিকে দুর্ঘটনায় আহত কর্মী মাসুদুল আলমের (৫০) ডান পা হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলা হয়েছে। তিনিও এখন আইসিইউতে আছেন। তার অবস্থা এখন স্থিতিশীল বলে জানান চমেক হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. হারুন অর রশীদ।

আর প্রবেশ লাল শর্মার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে হারুন অর রশীদের বক্তব্য, ' তার অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন, তার মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত লেগেছে।'

গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় সীমা রি-রোলিং মিলের অক্সিজেন প্ল্যান্টে এই বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত অন্তত ১৮ জন বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

আহতদের মধ্যে ৭ জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল ইসলাম। 

ভর্তি থাকা আহত ব্যক্তিদের একটি তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ক্যাজুয়ালিটি বিভাগে ভর্তি আছেন ৭ জন, অর্থোপেডিক্স বিভাগে ২ জন, নিউরো সার্জারি বিভাগে ৮ জন ও চক্ষু বিভাগে ৩ জন।

বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে অক্সিজেন প্ল্যান্টটি।

 

Comments

The Daily Star  | English
National election

Political parties must support the election drive

The election in February 2026 is among the most important challenges that we are going to face.

3h ago