টিনশেডেই কৃষি মার্কেট, ১ হাজার বান্ডিল টিন ও ৩০ লাখ টাকা দিল ত্রাণ মন্ত্রণালয়

পুড়ে যাওয়া মার্কেটের সামনে ও আশেপাশে অস্থায়ী দোকান খুলে মালপত্র বিক্রির চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটে নতুন করে দোকান তোলার জন্য ১ হাজার বান্ডিল টিন দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এসব টিন দিয়ে পুড়ে যাওয়া স্থানেই নতুন করে টিনশেড মার্কেট তৈরি হবে।

আজ রোববার ওই মার্কেটের ব্যবসায়ী নেতাদের কাছে এসব টিন ও ৩০ লাখ টাকা হস্তান্তর করেন ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।

ব্যবসায়ীদের দাবি ছিল ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে যেন নতুন করে বহুতল মার্কেট না করে টিনশেড মার্কেট করা হয়।

টিন হস্তান্তরের খবর পেয়ে ব্যবসায়ীরা সন্তুষ্ট। তারা আশা করছেন, আগামী দুয়েকদিনের মধ্যে দোকান তৈরির কাজ শুরু হবে।

রোববার সন্ধ্যায় সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, পুড়ে যাওয়া মার্কেটের সামনে ও আশেপাশে অস্থায়ী দোকান খুলে মালপত্র বিক্রির চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা। কেউ চৌকি পেতে, আবার কেউ ভ্যানগাড়িতে পোশাক, জুতা, ক্রোকারিজ, মুদি মালামাল নিয়ে বসেছেন। সেখানে ক্রেতাদের সমাগমও আছে।

কেউ চৌকি পেতে, আবার কেউ ভ্যানগাড়িতে পোশাক, জুতা, ক্রোকারিজ, মুদি মালামাল নিয়ে বসেছেন। সেখানে ক্রেতাদের সমাগমও আছে। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

কৃষি মার্কেটের প্লাস্টিক সামগ্রীর দোকান মা-বাবার দোয়ার সত্ত্বাধিকারী মো. রুবেল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '১৫ বছর ধরে এই মার্কেটে আমাদের দোকান। আগুন লাগার আগে ৩০-৩৫ লাখ টাকার মালামাল ছিল। আমাদের দোকানে প্লাস্টিক সামগ্রী ছাড়াও পাইকারি সিগারেট ছিল। আগুন লাগার খবর পেয়ে যখন আসি, ততক্ষণে সব পুড়ে গেছে।'

পুড়ে যাওয়া দোকানের সামনেই কাঠের চৌকি বসিয়ে ব্যবসা শুরু করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে ঋণ করে ও বাকিতে মোট দেড় লাখ টাকার প্লাস্টিক সামগ্রী উঠিয়েছেন দোকানে।

ঘুরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়ে রুবেল বলেন, 'ভয়ে ছিলাম যে এখানে বহুতল ভবনের নামে দোকানটাই হাতছাড়া হয় কি না। আজ টিন আসার খবর পেয়ে আশা করছি, আগের মতো করেই দোকান করতে পারব, অল্প দিনের মধ্যেই পুরোদমে ব্যবসা শুরু করতে পারব।'

একটি ভ্যানে মেয়েদের থ্রি-পিস বিক্রি করছিলেন মার্কেটের রোকেয়া ফ্যাশনের ম্যানেজার রবিউল। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দোকানের প্রায় ৩০ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে সেদিনের ভয়াবহ আগুনে। দোকানের মালিক মো. হোসেন ভেঙে পড়েছেন। তিনি আসেন না। ব্যবসা চালু রাখতে মালিকের কথায় আমি ভ্যানে কিছু মালামাল নিয়ে এখানে বসেছি। আজ টিন, টাকা এসেছে মার্কেটের নামে। আশা করছি শিগগির আবার দোকান চালু করতে পারব।'

গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভোর ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে কৃষি মার্কেটে আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট প্রায় ৫ ঘণ্টার চেষ্টায় সকাল ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

বাজারের ক, খ ও গ এই ৩ ব্লকের মধ্যে দুটি ব্লকের সব দোকান আগুনে পুড়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় আছেন ২৬৮ দোকান মালিক ও ব্যবসায়ী এবং ৫৬৯ বিক্রয়কর্মী।

পুড়ে যাওয়া মার্কেটের সভাপতি স্থানীয় কাউন্সিলর সলিমুল্লাহ সলু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ক্ষতিগ্রস্ত মার্কেট নতুন করে তৈরি করতে আজ ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে ১ হাজার বান্ডিল টিন ও ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা পেয়েছি। মঙ্গলবার থেকে মার্কেট তৈরির কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি। আগামীকাল এখানে মেয়র আসবেন। তিনি কাজের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা দেবেন।'  

জানতে চাইলে ঢাকা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ প্রতিমন্ত্রী কৃষি মার্কেটে গিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে ১ হাজার বান্ডিল টিন হস্তান্তর করেছেন। দোকান নির্মাণের জন্য আনুষঙ্গিক খরচের জন্য ৩০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। আরও ১ কোটি টাকা দেওয়া হবে শিগগির।'

Comments

The Daily Star  | English
Khaleda Zia calls for unity

‘Seize the moment to anchor democracy’

Urging people to remain united, BNP Chairperson Khaleda Zia has said the country must quickly seize the opportunity to institutionalise the democratic system.

7h ago