খালের পানি ঢালায় বাবুরহাটের আগুন আরও বেড়ে যায়: ফায়ার সার্ভিস

নরসিংদী বাবুরহাটের পাইকারি কাপড় বাজারের পাশের অবস্থিত খালে কেমিক্যাল থাকায় আগুন নেভাতে তা আশানুরূপ কাজ কাজ করেনি। বরং আগুন বেড়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
নরসিংদী জেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছানোর আগে আগুন অনেকটা ছড়িয়ে পড়েছিল। ফায়ার সার্ভিসের ১০ টি ইউনিট ও ৭ টি পাম্প ব্যবহার করেও প্রায় পৌনে ২ ঘণ্টা সময় লেগেছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে।'
বাবুরহাট বাজারের পাশে যে খালটি ছিল, সে খালের পানিতে কেমিক্যালসহ দাহ্য বস্তু ছিল বলে জানান তিনি।
'খালের পানি দিয়ে আগুন নেভাতে চেষ্টা করার সময় দেখা যাচ্ছিল যে, তেমন কাজ করছে না। বিভিন্ন ফ্যাক্টরি থেকে কেমিক্যাল এসে পানিতে মিশ্রিত হওয়ায় পানি দূষিত হয়েছে। ফলে, অল্প আগুন নেভাতেও আমাদের প্রচণ্ড বেগ পেতে হয়েছে,' বলেন তিনি।
বাবুবাজারের অব্যবস্থাপনা সম্পর্কে তিনি বলেন, 'দোকানগুলো এলোপাথারি ছিল, প্রায় প্রতিটি দোকানের সামনের ওপরের অংশে কাপড় দিয়ে ছায়া তৈরি করা হয়েছিল। কাপড়গুলো আগুন ছড়াতে সাহায্য করেছে। বাজারের ভেতরের সরু রাস্তা। এ কারণে আমাদের গাড়ি ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। দোকান মালিকরা নিজের দোকান যেন পুড়ে না যায়, সে জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি টানাটানি করেছেন। এসব কারণেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ধারণার চেয়েও বেশি হয়েছে।'
এ বিষয়ে নরসিংদী জেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. রায়হান বলেন, 'আমাদের কাছে ৬ হাজার লিটার পানি ছিল। কিন্তু খালের ওপর ভাঙ্গা সেতু হওয়ায় গাড়ি ঢুকতে পারেনি। পানি দিয়ে এমনিতে যত দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, বাবুরহাটের পাশের খালের পানি সেভাবে কাজ করেনি। খুব সম্ভবত পানিতে কেমিক্যাল থাকার কারণে এমনটি হয়েছে। এর ফলে, আগুন নেভাতে বেশি সময় লেগেছে ও ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। তাছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়কেই আমাদের গাড়ি রাখতে হয়েছে।'
স্থানীয়রা জানায়, রোববার রাত ১১টায় বাবুবাজারে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট সেখানে পৌঁছায় ১১টা ২৫ মিনিটে। পরে নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরেরও কয়েকটি ইউনিট সেখানে যোগ দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে মোট ১০টি ইউনিট ও ৭টি পাম্প কাজ করেছে। রাত পৌনে ২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
শেখেরচর বণিক সমিতির সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, 'ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আমরা ধারণা করছি যে, আগুনে ১১৭ জন দোকান মালিকের প্রায় ২৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।'
নরসিংদী সদর আসনের সংসদ সদস্য মো. নজরুল ইসলাম হিরো বলেন, 'বাজারের অব্যবস্থাপনার জন্য আগুন ছড়িয়েছে। বণিক সমিতি এর দায় এড়াতে পারে না। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেওয়ার পর, যারা অব্যবস্থাপনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তালিকা তৈরী করে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
Comments