নারায়ণগঞ্জে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৮

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি টিনশেড বাসায় গ্যাস লিকেজ থেকে আগুনে দগ্ধ হয়েছেন দুই পরিবারের শিশুসহ আটজন। তাদেরকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
আমাদের নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, আজ সোমবার ভোররাত ৩টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের পশ্চিম ধনকুন্ডা এলাকায় ইব্রাহিম খলিলের টিনসেড বাসায় এ দুর্ঘটনা ঘটে এবং ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, 'দুই কক্ষবিশিষ্ট সেমিপাকা টিনসেড ঘরের নিচ দিয়ে গ্যাসের লাইন গেছে৷ সেখান থেকে কোনোভাবে গ্যাস লিকেজ হয় এবং এর থেকে কক্ষের ভেতর গ্যাস চেম্বারের সৃষ্টি হয়৷ যেকোনোভাবে আগুনের স্পার্ক পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন ধরে যায়।'
দগ্ধ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মধ্যরাতে হঠাৎ করেই গ্যাস লাইন থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে টিনশেড ঘরে। এ সময় দুটি ঘরে থাকা আটজনই দগ্ধ হন।
দগ্ধরা হলেন—রিকশাচালক হান্নান (৪০), তার স্ত্রী নুরজাহান লাকী (৩০), মেয়ে জান্নাত (৩), মেয়ে সামিয়া (৯) ও ছেলে সাব্বির (১৬) এবং আরেক পরিবারের পোশাক শ্রমিক সোহাগ (২৩), তার স্ত্রী রুপালি (২০) ও তাদের একমাত্র দেড় বছর বয়সী মেয়ে সুমাইয়া।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, হান্নানের শরীরে ৪৫ শতাংশ, নুরজাহানের ২২ শতাংশ, জান্নাতের ৩ শতাংশ, সামিয়ার ৭ শতাংশ, সাব্বিরের ২৭ শতাংশ, সোহাগের ৪০ শতাংশ, রুপালির ৩৪ শতাংশ ও সুমাইয়ার ৪৪ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
ইনস্টিটিউটটির পরিচালক ডা. নাসির উদ্দিন জানান, শ্বাসনালী পুড়ে যাওয়ায় আটজনের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রাখা হয়েছে।
প্রতিবেশীরা জানান, বিস্ফোরণের শব্দ শুনে তারা ঘর থেকে বের হয়ে পাশাপাশি দুটি কক্ষে আগুন জ্বলতে দেখেন৷ দগ্ধ অবস্থায় সোহাগ ও রূপালী ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন৷ পরে দরজা ভেঙে বাকি দগ্ধদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহত রূপালীর ভগ্নিপতি মোস্তাফিজুর রহমান রনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনার সময় সবাই ছিল ঘুমে৷ ঘুমন্ত অবস্থাতেই তারা দগ্ধ হন৷ ঘর থেকে রান্নাঘর আরও ১০ মিটার দূরে হলেও ঘরের পাশে গ্যাস রাইজার আছে৷ সেখান থেকে গ্যাস লিক হইতে পারে৷'
চিকিৎসকের বরাতে তিনি জানান, রূপালী, তার স্বামী সোহাগ ও একমাত্র কন্যা সুমাইয়া তিনজনই আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন৷ সুমাইয়াকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে৷
Comments