আগাম তরমুজে লাভবান চাষি

আগাম তরমুজে লাভবান চাষি
ইতোমধ্যে চাষিরা খেত থেকে তরমুজ বিক্রি শুরু করেছেন। ছবি: সোহরাব হোসেন/স্টার

পটুয়াখালীতে আগাম তরমুজের ফলনে খুশি চাষিরা। একইসঙ্গে তারা লাভবানও হচ্ছেন। ইতোমধ্যে চাষিরা খেত থেকে তরমুজ বিক্রি শুরু করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী জাহাজমারা, মৌডুবি ও কলাগাছিয়া এলাকার বালুচর আগে পতিত থাকত। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু জমিতে তরমুজ চাষ হলেও ৩ বছর ধরে এখানে আগাম তরমুজের চাষ শুরু হয়। তবে তরমুজ খেতে সেচের জন্য  মিঠাপানির প্রয়োজন। কিন্তু, চাষিরা মিঠা পানির সংকটে আছেন। সরকারি উদ্যোগে মিঠা পানির ব্যবস্থা করা গেলে বালুজমিতে তরমুজ চাষ আরও সহজ হবে।

সাধারণত ডিসেম্বরে আমন ধান তোলার পর জানুয়ারি থেকে তরমুজের আবাদ শুরু হয়। ফলন আসে এপ্রিলে। তবে রাঙ্গাবালী উপজেলার সাগরপাড়ের জাহাজমারা, মৌডুবি এবং কলাগাছিয়ায় ডিসেম্বরে আগাম তরমুজের আবাদ শুরু হয়। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে তরমুজ বিক্রি শুরু হয়।

তরমুজ চাষি জুলহাস (৪৫) বলেন, 'চরের এ জমি দীর্ঘদিন অনাবাদী থাকত। ৩ বছর ধরে আমরা শীতকালে তরমুজের আবাদ করছি। আমি এ বছর ৩ বিঘা জমিতে জমিতে তরমুজের আবাদ করেছি। এতে প্রায় ১ লাখ টাকা। খেতের পাশে মাটি খনন করে বড় কুয়া তৈরি করে মিঠা পানি সংরক্ষণ করেছি। সেই কুয়া থেকে পানি তুলে সেচ দিচ্ছি।'

তিনি আরও বলেন, 'তরমুজ চাষে প্রচুর পানির প্রয়োজন। সাগরপাড়ে নোনা পানি। এ কারণে মিঠাপানির জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়।'

অপর তরমুজ চাষি ফারুক হাওলাদার ৪ বিঘা জমিতে তরমুজ আবাদ করেছেন। তার খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। তিনি ৩০০টি তরমুজ বিক্রি করেছেন। প্রতিটির দাম ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। এখনো খেতে ৩-৪ লাখ টাকার তরমুজ আছে বলে জানান তিনি।

আরেক তরমুজ চাষি আব্দুস সাকুর জানান, তিনি এ বছর ৩ বিঘা জমিতে তরমুজ আবাদ করেছেন এবং প্রায় ৪ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রির আশা করছেন।

তিনি বলেন, 'পদ্মা সেতু চালুও হওয়ায় ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ীরা এখান থেকে ট্রাকে করে তরমুজ নিয়ে যাচ্ছেন। এ কারণে আগের তুলনায় দাম ভালো পাচ্ছি।'

পটুয়াখালী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত বছর জেলায় ২২ হাজার ৮৯০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছিল। এ বছর আবাদ হয়েছে ২৮ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে আগাম তরমুজের চাষ বেশি হচ্ছে গলাচিপা ও রাঙ্গাবালী উপজেলায়। এর মধ্যে গলাচিপায় ১১ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে এবং রাঙ্গাবালীতে ৮ হাজার ২৬২ হেক্টরে তরমুজ চাষ হয়েছে। এছাড়াও, বাউফল উপজেলায় ৩ হাজার ১৩১ হেক্টরে, কলাপাড়ায় ২ হাজার ৩৭০ হেক্টর, দশমিনায় ১ হাজার ৮৫০ হেক্টর, পটুয়াখালী সদর উপজেলায় ১ হাজার ১৯৭ হেক্টর, দুমকিতে ১২০ হেক্টর ও মির্জাগঞ্জে ৬৫ হেক্টরে তরমুজ আবাদ হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মাদ নজরুল ইসলাম বলেন, 'এ বছর তরমুজের আবাদ ও ফলন ভালো হয়েছে। আগাম তরমুজ বিক্রিও শুরু হয়েছে। কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন। আশা করছি প্রতি হেক্টরে ২৫ থেকে ৩০ টর ফলন পাওয়া যাবে এবার। পদ্মা সেতুর কারণে এখানকার তরমুজ সরাসরি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো যাবে। পাইকারি ব্যবসায়ীরাও এখান থেকে ভালো দামে তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।'

Comments

The Daily Star  | English

Bangladeshi killed in Israeli airstrike in Lebanon’s Beirut

Mohammad Nizam, 31, died at 3:23pm in Hazmiye area of Beirut, according to a social media post of Bangladesh embassy in Lebanon

1h ago