হামলায় আহত সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ‘মামলা’ করলেন অভিযুক্ত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা

সাভারে সাংবাদিকের ওপর হামলার পর উল্টো সেই সাংবাদিকের বিরুদ্ধেই মামলা করেছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সামিউল আলম শামীম।
সাভার
ছবি: স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

সাভারে সাংবাদিকের ওপর হামলার পর উল্টো সেই সাংবাদিকের বিরুদ্ধেই মামলা করেছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সামিউল আলম শামীম।

গত রোববার দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত হন স্থানীয় সাংবাদিক সোহেল রানা। এ ঘটনায় সাংবাদিকের পক্ষ থেকে করা মামলায় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সামিউল আলম শামীমকে প্রধান আসামি করা হয়েছিল।

তবে আহত সাংবাদিকসহ দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করেছেন আশুলিয়া থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সামিউল আলম শামীম।

আজ বুধবার বিকেলে দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছেন সামিউল।

তিনি জানান, গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালতে সাংবাদিক সোহেল রানা (২৬) ও সাংবাদিক জাহিন জিংহ (২৮) বিরুদ্ধে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে মামলা করেছেন তিনি।  

সোহেল রানা দৈনিক তৃতীয় মাত্রার সাভার প্রতিনিধি ও জাহিন সিংহ দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের সাভার প্রতিনিধি।

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সামিউল বলেন, 'সোহেল রানা ও জাহিন সিংহ বিভিন্ন সময় আমার কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে চাঁদা নিতেন। সর্বশেষ গত ৫ আগস্ট আমার অফিসে এসে তারা ২ জন প্রকাশ্যে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় সোহেল ও জাহিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে ও ফেইসবুকে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়। এই ঘটনায় আমি মামলা করছি।'

ওই হামলার ঘটনায় সোহেলের সোহেলের মামা আশরাফুল আলমের দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি হয়ে নিজেই আবার সোহেলের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা করায় এটি কাউন্টার মামলা হয়ে গেল কি না জানতে চাইলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কাউন্টার মামলা হবে কেন? আমি গত ১৩ আগস্ট সোহেল ও জহিনের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় জিডি করি।'

'হামলার ঘটনায় আমাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। আমি তো ঘটনার কিছুই জানিনা,' দাবি করেন সামিউল।

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সামিউলের দায়র করা মামলার একটি কপি দ্য ডেইলি স্টারের হাতে এসেছে। সেটিতে সুমাইয়া ইসলাম নামে একজন অ্যাডভোকেটের সিল এবং স্বাক্ষর রয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে অ্যাডভোকেট সুমাইয়া ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আসলে এই মামলার বিষয়ে আমি জানিনা। আমরা ২২ জন লয়্যার একটি অ্যাসোসিয়েটের মাধ্যমে কাজ করি। হয়তো এর যেকোনো একজন মামলাটি নিয়েছেন এবং আমার সিলটি ব্যবহার করছেন।'

আপনাকে না জানিয়ে আপনার মামলা দায়েরের সময় আপনার সিল কেউ ব্যবহার করতে পারেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'হ্যাঁ পারে। তবে বাদীর নিকট থেকে একটু কনফার্ম হন কার মাধ্যমে মামলাটি ফাইল হয়েছে। উনিই ভালো বলতে পারবেন।'

এদিকে মামলাটি কোন অ্যাডভোকেটের মাধ্যমে দায়ের করা হয়েছে জানতে চাইলে তার নাম প্রকাশ করেননি মামলার বাদি ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সামিউল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিক সোহেল রানা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত রোববার উপজেলা পরিষদে আমার ওপর হামলা হয়। হামলায় আমি গুরুতর আহত হয়েছি। বর্তমানে এনাম মেডিকেলের নিউরো আইসিইউতে ভর্তি। হামলার ঘটনায় ওই রাতেই আমার মামা বাদি হয়ে সাভার মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার প্রধান আসামি সামিউল আলম শামীম। মামলা থেকে বাঁচতে ও আমাদের হয়রানি করতে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা করছে।'

'শামীম ও তার সহোযোগীরা বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে আমি ও সাংবাদিক জাহিনের ছবি বিকৃত করে বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়েছেন। ওই ঘটনায় আমি সাভার মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলাম। তার পরদিনই আমার ওপর হামলা করা হয়,' বলেন তিনি।

Comments