প্রায় দেড় হাজার ছিনতাই করেছেন রুবেল: ডিবি

ছিনতাইকারী শাকিল আহমেদ রুবেল প্রায়ই পুলিশের ছদ্মবেশে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের নারী শিক্ষার্থীদের টার্গেট করতেন। হাতকড়া, পিস্তল ও ওয়াকিটকি নিয়ে তিনি তাদের রাস্তা থেকে তুলে নিতেন। পরে পুলিশের লোগো লাগানো মোটরসাইকেলে করে দূরে কোথাও নিয়ে মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিতেন।
শাকিল আহম্মেদ রুবেল। ছবি: সংগৃহীত

ছিনতাইকারী শাকিল আহম্মেদ রুবেল প্রায়ই পুলিশের ছদ্মবেশে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের নারী শিক্ষার্থীদের টার্গেট করতেন। হাতকড়া, পিস্তল ও ওয়াকিটকি নিয়ে তিনি তাদের রাস্তা থেকে তুলে নিতেন। পরে পুলিশের লোগো লাগানো মোটরসাইকেলে করে দূরে কোথাও নিয়ে মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিতেন।

এভাবে রুবেল ও তার দলের সদস্যরা প্রায় দেড় হাজার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটান, যার বেশিরভাগের শিকার বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের নারী শিক্ষার্থীরা। এদের মধ্যে ১৫০ জনের বেশি নারী যৌন নিপীড়নের শিকার হন।

আজ রোববার ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার অতিরিক্ত কমিশনার হারুন-অর-রশিদ এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান।

গত ২৫ আগস্ট রাজধানীর তুরাগ এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় অভিযুক্ত রুবেলসহ (২৮) মোট ৪ জনকে বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গেপ্তার হওয়া অন্য ৩ জন হলেন- আকাশ শেখ (২২), দেলোয়ার হোসেন (৫৫) হাবিবুর রহমান (৩৫)।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২৫ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই নারী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কল্যাণপুরের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। তখন রুবেল নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে তার রিকশা আটকায়। পরে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে মেয়েটিকে ডিএমপির লোগো লাগানো একটি মোটরসাইকেলে করে উত্তরার তুরাগ এলাকায় নিয়ে তাকে মারধর করে এবং যৌন নিপীড়নের চেষ্টা করে। এসময় স্থানীয় এক ব্যক্তি এগিয়ে আসলে রুবেল তার মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়।

পরে এ বিষয়ে তুরাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।  

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার হারুন জানান, রুবেলসগ গেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ১টি পিস্তল, ২টি গুলি, ১টি ওয়াকিটকি সেট, ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত ২টি মোটরসাইকেল এবং ওই শিক্ষার্থীর ব্যবহৃত ১টি পার্স উদ্ধার করা হয়েছে।

হারুন বলেন, 'তার (রুবেল) মূল টার্গেট ছিল মেয়েরা। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ও কলেজ ছাত্রীরা। সে বরিশালেও এমন একটি মেয়েকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। সে নিজেই স্বীকার করেছে যে, সে দেড় হাজারের বেশি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে। আর অর্ধশতাধিক মেয়ের সঙ্গে অশালীন ব্যবহার থেকে শুরু করে ধর্ষণের মতো ঘটনাও ঘটিয়েছে।'

হারুন-অর-রশিদের ভাষ্য, মেয়েরা যেন বাবা-মায়ের কাছে ছিনতাইয়ের কথা বলতে সাহস না পায়, সে জন্য রুবেল তাদের ওপর নিপীড়ন চালাতেন।

রুবেলের বিরুদ্ধ বিভিন্ন থানায় কমপক্ষে ৬টি ডাকাতি ও ছিনতাই মামলা আছে বলেও জানান হারুন। এর আগেও তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে তুলে নিতে যে মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করা হয়েছিল সেটিও গত ১২ আগস্ট জাহাঙ্গীর হোসেন নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

Comments