ফরিদপুরের রুবেল-বরকতের সহযোগী সাইফুল কারাগারে

ফরিদপুরে আলোচিত দুই ভাই ফরিদপুর প্রেসক্লাবের বহিষ্কৃত সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান ওরফে রুবেল ও শহর আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতি পাওয়া সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন ওরফে বরকতের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সাইফুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার জেলা ও দায়রা জজ আকবর আলী শেখ এর আদালতে দুটি এবং অতিরিক্ত জেলা জজ-২ এর শিয়াবুল ইসলামের আদালতে একটিসহ তিনটি মামলায় জামিনের আবেদন করা হয়। তিনটি মামলাতেই তার আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। সাইফুলের আইনজীবী শফিক মুন্সী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সাইফুল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ফরিদপুর পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের বনগ্রাম মহল্লার বাসিন্দা মাজেদ মল্লিকের ছেলে।
সাইফুলের বাবা মাজেদ মল্লিক বলেন, সাইফুলের বিরুদ্ধে অনেকগুলি মামলা আছে। আমরা হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নেইনি। টাকা পয়সা খরচ করে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিলেও কয়েক সপ্তাহ পর নিম্ন আদালতে আসতেই হতো। এজন্য টাকা খরচ করিনি।
সাইফুলের আইনজীবী শফিক মুন্সী বলেন, প্রথমে অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে একটি মামলার শুনানিতে জামিন নাকচ করা হয়। পরে জেলা জজ আদালতে বাকি দুটি মামলার শুনানিতে জামিন নাকচ হয়ে যায়।
এ তিনটি মামলার মধ্যে রয়েছে ফরিদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম চৌধুরীর উপর হামলা ও কুপিয়ে জখম করা, জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক দীপক মজুমদারের উপর হামলা ও কুপিয়ে জখম করা এবং বিআরটিসির ম্যানেজার দুলাল লস্করের চাঁদাবাজির অভিযোগে দায়ের করা মামলা।
রুবেল-বরকতের বিরুদ্ধে ঢাকার কাফরুল থানায় ২ হাজার কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ঢাকার কাফরুল থানায় সিআইডির মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি সাইফুল। তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা ছাড়াও ছোটন হত্যা মামলা, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলাসহ আরও বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।
২০২০ সালের ১৬ মে শহরের গোয়ালচামট মহল্লার মোল্লাবাড়ি সড়কে অবস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ১৮ মে মামলা করেন সুবল চন্দ্র সাহা।
ওই মামলার সূত্র ধরে ওই বছর ৭ জুন ফরিদপুরে পুলিশের বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়। ওই দিন ফরিদপুর-৩ আসানের সংসদ সদস্য সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের শহরতলীর বদরপুরস্থ আফসানা মঞ্জিল নামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে রুবেল বরকতসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন সাইফুল।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার জানান, আদালতে জামিনের আবেদন নাকচ হওয়ার পর সাইফুলকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, মানি লন্ডারিং মামলাসহ বাকি মামলাগুলোতেও সাইফুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
Comments