নাটোরের সিভিল সার্জনসহ ৩ চিকিৎসককে সতর্ক করলেন আদালত

নাটোরের সিভিল সার্জন ডা. রোজী আরা খাতুন এবং আধুনিক সদর হাসপাতালের আরও ২ চিকিৎসককে সতর্ক করেছেন আদালত।
নাটোর
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

নাটোরের সিভিল সার্জন ডা. রোজী আরা খাতুন এবং আধুনিক সদর হাসপাতালের আরও ২ চিকিৎসককে সতর্ক করেছেন আদালত।

একজনের ওপর হামলার ঘটনায় হওয়ায় মামলায় আহতের জখমি সনদ দিতে গড়িমসি করায় নাটোরের সিংড়া আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদ তাদের সতর্ক করেন।

আদালত তলব করায় নাটোরের সিভিল সার্জন ডা. রোজী আরা খাতুন, আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সহকারী পরিচালক ডা. পরিতোষ কুমার রায় এবং একই হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মুরাদ-উদ-দ্দৌলা আজ আদালতে হাজির হন। তারা আজ আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দেন। এ সময় তারা আদালতে আহত রোগীর জখমি সনদ সরবরাহ করেন। আদালত তাদের ব্যাখ্যা গ্রহণ করার পাশাপাশি সতর্ক করেন ও গাফলতির দায় হতে অব্যাহতি দেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, 'সিংড়া উপজেলার বাগচী চামারী গ্রামের মো. সাইদুল ইসলাম ও তার দুই ভাই জহুরুল ইসলাম ও আবুল কালামের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জেরে গত ২০ মার্চ রাতে সাইদুলের ওপর হামলা হয়। লাঠির আঘাতে তার একটি হাত ভেঙে যায়। সাইদুল নাটোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মো. মুরাদ উদ-দৌলা তার হাতে প্লাস্টার করেন।

২৭ মার্চ জহুরুল ইসলাম, আবুল কালাম আজাদ ও জহুরুলের ছেলে মো. লিটনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করেন মো. সাইদুল ইসলাম। আদালত সিংড়া থানা পুলিশকে মামলা রুজু করে তদন্তের আদেশ দেন।

এই মামলায় সাইদুলের মেডিকেল সনদের জন্য আধুনিক সদর হাসপাতালে আবেদন করেন সিংড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল হাই। হাসপাতাল থেকে সনদ না দেওয়ায় তিনি আদালতের কাছে মেডিকেল সনদ তলবের জন্য আবেদন করেন।

ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত গত ২২ জুন জখমি সনদ দেওয়ার জন্য ডা. মো. মুরাদ-উদ-দ্দৌলাকে আদেশ দেন। আদেশের অনুলিপি নাটোরের সিভিল সার্জন এবং আধুনিক সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালককে পাঠানো হয়।

এরপরও জখমি সনদ না দেওয়ায় আদালত আবার আদেশ জারি করেন। তখন, জখমি সনদের পরিবর্তে ডা. মুরাদ-উদ-দ্দৌলা আদালতে একটি অবগতি পত্র পাঠান। একই অবগতি পত্র তিনি এর আগে তদন্ত কর্মকর্তাকেও দিয়েছিলেন।

অবগতি পত্র দেওয়ায় আহত মো. সাইদুল ইসলামকে সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার আদেশ দেন ম্যাজিস্ট্রেট। আদালতে তার চিকিৎসাপত্র ও ক্ষতস্থান পর্যবেক্ষণ করে দেখা হয়। সাইদুলের বক্তব্য অনুযায়ী, তার ডান হাতের হাড় ভেঙে গিয়েছে। তিনি হাতের এক্স-রে রিপোর্ট আদালতে পেশ করেন।

একাধিকবার আদেশ দেওয়ার পরও আহতের জখমি সনদ না দেওয়ায় কেন আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না এবং কর্তব্য অবহেলায় বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানাতে ৩ অক্টোবর সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে নাটোরের সিভিল সার্জন ডা. রোজী আরা খাতুন, আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সহকারী পরিচালক ডা. পরিতোষ কুমার রায় এবং একই হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মুরাদ-উদ-দ্দৌলাকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে আহতের মেডিকেল সনদ ও জখমের বিবরণ সংক্রান্ত রেজিস্টারসহ হাজির হতে বলা হয়  হাসপাতালের সহকারী পরিচালককে।

জানতে চাইলে নাটোরের সিভিল সার্জন ডা. রোজী আরা খাতুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছি। জখমির মেডিকেল সার্টিফিকেটও আদালতে জমা দিয়েছি। পরবর্তীতে আদালত কী আদেশ দিয়েছেন জানতে পারিনি।'

Comments

The Daily Star  | English

High Temperature Days: Barring miracle, record of 76yrs breaks today

At least 23 days of this month were heatwave days, which equals the record set in 2019 for the entire year.

12h ago