চুরির অভিযোগে প্রতিবন্ধী যুবককে মারধর, পাল্টা মামলা ইউপি সদস্যের

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে বাড়িতে আটকে রেখে এক প্রতিবন্ধী যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।  

ওই মামলার ২ দিন পর প্রতিবন্ধী যুবকের বিরুদ্ধে চুরির মামলা করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইমাম উদ্দিন হিফজুরের ছোট ভাই রাজু আহমদ।

গতকাল মঙ্গলবার বড়লেখা থানায় এই মামলা করেন তিনি। ইমাম উদ্দিন হিফজুর নিজবাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।

গত ১৬ অক্টোবর বড়লেখা আদালতে নির্যাতনের অভিযোগে ইউপি সদস্য ইমাম উদ্দিন হিফজুর ও তার ছোট ভাই রাজু আহমদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন প্রতিবন্ধী যুবক কলিম উদ্দিনের বড় ভাই ছইদুর রহমান।

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইউপি সদস্য ইমাম উদ্দিন হিফজুর ও তার ভাই রাজু আহমদ মোবাইল ফোন চুরির অপবাদ দিয়ে গত ১৪ অক্টোবর কলিম উদ্দিনকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করতে কলিম উদ্দিনকে হাত-পা বেধে নির্যাতন করেন ইউপি সদস্য ও তার ভাই। নির্যাতনের পর তারা বিভিন্ন সাদা কাগজ ও স্ট্যাম্পে কলিম উদ্দিনের স্বাক্ষর নেন। পরে তারা বড়লেখা থানায় নিয়ে পুলিশের সামনে মারধর করে কলিম উদ্দিনের একটি স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও ধারণ করেন।

রাত ১০টার দিকে কলিমকে তার বাড়ির সামনে ফেলে যান ইউপি সদস্যের ভাই রাজু। পরে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্থানীয়রা।

বড়লেখা আদালতের বেঞ্চ সহকারী ইকরাম হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ১৬ অক্টোবর আদালত তাদের অভিযোগটি আমলে নিয়ে আগামী ২৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।'

থানা কমপ্লেক্সে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বড়লেখা থানা পুলিশের এসআই (উপপরিদর্শক) জাহেদ আহমদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি ওই যুবককে ধরে থানায় আনি নাই। মেম্বার ও তার ভাই রাজু তাকে থানায় নিয়ে আসছে। তাকে থানায় কোনো মারধর করা হয়নি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মনে হয়েছে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। একেক সময় একেক কথা বলছে। পরে মেম্বারের ভাই রাজু তাক নিয়ে চলে যায়।'

তিনি আরও বলেন, '১৬ অক্টোবর ওই যুবকের পরিবার আদালতে মামলা করেছে বলে শুনেছি। পরে ১৮ অক্টোবর রাজু আহমদ বাদী হয়ে থানায় ওই যুবকের নামে চুরির মামলা করেন। মামলাটি আমাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এরপর আমি চুরি যাওয়া মোবাইলটি উদ্ধার ও মামলার তদন্ত শুরু করেছি।'

মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য ইমাম উদ্দিন হিফজুর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার মোবাইল চুরি হওয়ায় তাকে ফোন দিয়ে বাড়িতে আনি। তখন মোবাইল নেওয়ার বিষয়টি সে স্বীকার করেছে। তাকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি। তাকে অন্য কেউ যদি মারে আমি জানি না। আমি থানায় জিডি করেছি। পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে কী করেছে জানি না।'

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বড়লেখা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়ারদৌস হাসান বলেন, 'আমি থানায় নতুন জয়েন করেছি। আমি জয়েনের আগে মামলাটি রেকর্ড হয়েছে। পুলিশ পরিদর্শক তদন্তের ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে পারবেন।'

নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার দুদিন পর থানায় উল্টো প্রতিবন্ধী যুবকের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বড়লেখা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, 'ঘটনাটি তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। আর নির্যাতনের বিষয়টি আমার জানা নেই।'

Comments

The Daily Star  | English
CAAB pilot licence irregularities Bangladesh

Regulator repeatedly ignored red flags

Time after time, the internal safety department of the Civil Aviation Authority of Bangladesh uncovered irregularities in pilot licencing and raised concerns about aviation safety, only to be overridden by the civil aviation’s higher authorities.

9h ago