২ জঙ্গি ছিনতাইয়ে সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিতের এপিএস ফারুক জড়িত: পুলিশ

ঢাকার আদালত চত্বর থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২ জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় প্রয়াত সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের এপিএস ওমর ফারুক তালুকদার জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
দীপন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক ২ আসামি মাইনুল হাসান শামীম এবং আবু সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার আদালত চত্বর থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২ জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় প্রয়াত সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের এপিএস ওমর ফারুক তালুকদার জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ।

৬ দিন আগে তাকে গ্রেপ্তার করে ২ দফায় ৪ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।

আজ মঙ্গলবার ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) মো. আসাদুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, 'ঢাকার আদালত থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি আবু সিদ্দিক সোহেল ও মোজাম্মেল হোসেনকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ওমর ফারুকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। ওমর ফারুক পালিয়ে যাওয়া জঙ্গি আবু সিদ্দিক সোহেলের বোনকে বিয়ে করেছেন। ঘটনার আগে-পরের প্রযুক্তিগত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আবু সিদ্দিক সোহেল ও মোজাম্মেল হোসেনের স্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন ওমর ফারুক। এই ২ জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।'

গত ২০ নভেম্বর প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২ আনসার আল ইসলাম সদস্যকে ঢাকা সিএমএম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তাদের সঙ্গীরা। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ।

পুলিশ ও আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২ জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় এখন পর্যন্ত ওমর ফারুক, তার স্ত্রী তানজিলাসহ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা সবাই এখন কারাগারে।

গত ২০ ডিসেম্বর প্রয়াত সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের সাবেক এপিএস ওমর ফারুক তালুকদার ও তার স্ত্রী তানজিলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পরদিন ওমর ফারুককে আদালতে তুলে ১৫ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। পুলিশের পক্ষ থেকে সেদিন লিখিতভাবে আদালতের কাছে দাবি করা হয়, দুর্নীতির মামলায় ২০১২ সালে ওমর ফারুক যখন কারাগারে ছিলেন, তখন তিনি জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েন। আবু সিদ্দিকের বোনকে বিয়ে করে আনসার আল ইসলাম নামের সংগঠনকে নানাভাবে সহযোগিতা করেন। আইনজীবী পেশার আড়ালে তিনি জঙ্গিদের সহযোগিতা করেছেন। আদালত থেকে শ্যালক আবু সিদ্দিককে ছিনিয়ে নিতে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করেন।

৪ দফা রিমান্ড শেষে পুলিশের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে আদালতকে বলা হয়েছে, আবু সিদ্দিকের স্ত্রী শিখার সঙ্গে ময়মনসিংহে যান ওমর ফারুক। তার সঙ্গে নানা বিষয়ে পরামর্শ করেন। আবার আদালত চত্বরেও অপর পলাতক জঙ্গি মোজাম্মেলের স্ত্রীর সঙ্গে ওমর ফারুক কথা বলেন।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার আসাদুজ্জামান বলেন, 'ওমর ফারুক কীভাবে ২ জঙ্গিকে পালাতে সহযোগিতা করেছেন, সে ব্যাপারে আবু মোহাম্মদ হোসাইন (জঙ্গি মোজাম্মেলের বাবা) সাক্ষী হিসেবে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ওমর ফারুক ময়মনসিংহে গিয়ে তার মেয়ে শিখা ও মোজাম্মেলের স্ত্রী তৃষ্ণার সঙ্গে কথা বলেন।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Army given magistracy power

In order to improve law and order, the government last night gave the power of magistracy to commissioned army officers for 60 days.

16m ago