জামাতুল আনসারে যোগ দেওয়া ১১ জন বরিশাল বিভাগের: র‍্যাব

জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়াতে যোগ দেওয়া ৩৬ জনের পরিচয় পাওয়ার কথা জানিয়েছে র‍্যাব যাদের ১১ জন বরিশাল বিভাগের। তাদের মধ্যে পটুয়াখালীর ৬ জন, বরিশালের ৩ জন, বরগুনার ১ জন ও ঝালকাঠির ১ জন করে আছেন। এ ছাড়া ফরিদপুরের ২ জন ও মাদারীপুরের ১ জন।
পার্বত্য চট্টগ্রামে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়াতে যোগ দেওয়া ৩৬ জনের পরিচয় পাওয়ার কথা জানিয়েছে র‍্যাব যাদের ১১ জন বরিশাল বিভাগের। তাদের মধ্যে পটুয়াখালীর ৬ জন, বরিশালের ৩ জন, বরগুনার ১ জন ও ঝালকাঠির ১ জন করে আছেন। এ ছাড়া ফরিদপুরের ২ জন ও মাদারীপুরের ১ জন।

র‌্যাব-৮ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ২০২১ সাল থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে তারা বাড়ি ছেড়েছেন। তাদের বয়স ১৯ থেকে ৪৩ বছরের মধ্যে।

তিনি বলেন, জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার কথিত সামরিক শাখার প্রধান মাসুকুর রহমান ওরফে রনবীকে গ্রেপ্তারের পর তার মোবাইলে অস্ত্র প্রশিক্ষণের কিছু ভিডিও পাওয়া যায়। ওই ভিডিওতে থাকা ৩৬ জঙ্গির নাম-পরিচয় পেয়েছে র‌্যাব। মাসুকুর রহমানকে গত ২৪ জানুয়ারি কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের পাশের জঙ্গল থেকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছিল র‍্যাব।

পরিচয় শনাক্ত হওয়া জঙ্গিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগের ১১ জন হলেন, বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের মহাবাজ এলাকার রাক্কী আব্দুস সালাম ওরফে দুমচুক ওরফে রাসেল, একই উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের বুখাইনগর গ্রামের ঝড়ঝড়িয়াতলা এলাকার মো. আরিফুর রহমান ওরফে লাইলেন, বাকেরগঞ্জের পাদ্রিশীবপুরের ভবানীপুর গ্রামের মো. মাহমুদ ডাকুয়া ওরফে হাকা। পটুয়াখালী সদর উপজেলার লাউকাঠি গ্রামের আল আমিন ফকির ওরফে মোস্তাক, একই উপজেলার মিরাজ শিকদার ওরফে আশরাফ, পটুয়াখালীর দশমিনার মধ্য গছানি গ্রামের শামীম মিয়া ওরফে ওরফে চামদুর, একই উপজেলার উত্তর লক্ষীপুর দফিপুর গ্রামের মো. হোসাইন আহমদ ওরফে রেকমি, মহিপুর গ্রামের ওবায়দুল্লাহ সাকিব ওরফে শান্ত এবং মির্জাগঞ্জের সুবিধখালী গ্রামের জুয়েল ওরফে মাহমুদ।

বরগুনা জেলা সদরের বুরা মজুমদার গ্রামের সোহেল মোল্লা ওরফে সাইফুল্লাহ, ঝালকাঠীর কালি আন্দার গ্রামের মো. হাবিবুর রহমান ওরফে মুরা। এ ছাড়া ফরিদপুর ও মাদারিপুরের তিন জনের নাম জানিয়েছেন র‍্যাব। তারা হলেন, ফরিদপুরের মহনপুর গ্রামের মো. জাকারিয়া ওরফে ফিরুক, একই জেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মো. আবু জাফর পিন্টু ওরফে তাহান এবং মাদারীপুরের কালিকাপুর গ্রামের মো. ইয়াছিন ওরফে আরফি।

তাদের মধ্যে কেউ ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী এমনকি কৃষি গবেষণকও আছেন। তাদের অনেকেই মাদ্রাসা ও সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত। তবে তাদের কতজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে আছেন সেই তথ্য নিশ্চিত করে বলতে পারেননি এই র‍্যাব কর্মকর্তা।

এই র‍্যাব কর্মকর্তা বলেন, শনাক্ত হওয়া জঙ্গিদের একটি বড় অংশের বাড়ি বরিশাল বিভাগে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তারা জঙ্গি দলে যুক্ত হয়েছেন। যারা এসব জঙ্গিদের পেছনে আছেন তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছে র‌্যাব। এরা অনেকেই অত্মগোপন করেছেন।

তিনি বলেন, এই বিষয়ে সারা দেশেই র‍্যাবের অভিযান চলছে। আমরা যাদের পরিচয় পেয়েছি তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছি। এমনকি জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন কিন্তু নিখোঁজ হননি তাদের প্রতিও আমাদের নজর আছে।

র‌্যাবের একটি সূত্র জানায় জঙ্গিদের একটি অংশ ভোলার দুর্গম চরে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। বিশেষ করে মনপুরা ও চরকুকরি মুকরিসহ বেশ কয়েকটি চরে এদের তৎপরতায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নজর রাখছে।

Comments