১৫৪ কোটি টাকা ঘুষ লেনদেন

ঢাকা দূতাবাসের ২ সাবেক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করল সৌদি আরব

ঘুষ নিয়ে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভিসা দেওয়ার অভিযোগে ঢাকার সৌদি দূতাবাসের দুই সাবেক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির তদারকি ও দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষ।

অভিযোগ উঠেছে, এই দুই কর্মকর্তা বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাছ থেকে ৫ কোটি ৪০ লাখ সৌদি রিয়াল ঘুষ নিয়েছেন যা বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ১৫৪ কোটি টাকার সমান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ঢাকার সৌদি দূতাবাসের কনস্যুলার বিভাগের সাবেক প্রধান ও উপরাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ ফালাহ মুদাহি আল-শামারি এবং কনস্যুলার বিভাগের উপপ্রধান খালেদ নাসের আয়েদ আল-কাহতানি। রোববার সৌদি আরবের দৈনিক আল-মারসদ সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে তাদের গ্রেপ্তারের কথা জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রমিকদের ভিসা দেওয়ার বিনিময়ে ওই দুই সাবেক কর্মকর্তা ৫ কোটি ৪০ লাখ রিয়াল আদায় করেছেন। এই অর্থের একটি অংশ সৌদি আরবে পাঠানোর কথা স্বীকার করেছে এবং বাকিটা সৌদি আরবের বাইরে বিনিয়োগ করেছেন। ঢাকার সূত্রগুলো জানায়, রিক্রুটিং এজেন্সি থেকে ঘুষ নিয়ে ওয়ার্ক পারমিট দেওয়ার অভিযোগে সৌদি দূতাবাসের তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে বরখাস্ত হওয়া তৃতীয় কর্মকর্তার নাম জানা যায়নি।

পরিচয় প্রকাশ না করে সৌদি আরবের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো দূতাবাসের কর্মকর্তাদের ভিসা বাণিজ্যের ব্যাপারে দেশটির তদারকি এবং দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষকে তথ্য দিয়েছে।

তারা জানিয়েছে, প্রায় এক বছর আগে ঢাকার সৌদি দূতাবাস রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো থেকে প্রতিটি ভিসা দেওয়ার জন্য ২২০-২৫০ মার্কিন ডলার আদায় করত।

একজন রিক্রুটিং এজেন্ট জানান, হঠাৎ করে সৌদি দূতাবাস একটি নিয়ম করে যে একটি রিক্রুটিং এজেন্সি সপ্তাহে ২০টির বেশি ভিসা আবেদন জমা দিতে পারবে না। একটি এজেন্সি সপ্তাহে মাত্র একবার ভিসা আবেদন করতে পারে।

কিন্তু অনেক রিক্রুটিং এজেন্সি সপ্তাহে কয়েকশ পাসপোর্ট নিয়ে কাজ করে। ভিসা পেতে এই এজেন্সিগুলো সমস্যায় পড়ে যায়। এজেন্সিগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর্মীদের ভিসা পাইয়ে দিতে মরিয়া হওয়ায় দূতাবাসের কর্মীরা টাকা নেওয়া শুরু করে।

একজন রিক্রুটিং এজেন্ট ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এভাবে টাকার বিনিময়ে সৌদি ভিসা দেওয়া শুরু হয়। সংকট থাকার পরও তাদেরকে ডলারে অর্থ দিতে হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সৌদি কর্মকর্তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর পর ঘুষ আদায় বন্ধ হয়ে যায়।'

বাংলাদেশ থেকে গত বছর ৬ লাখ ১২ হাজারের বেশি শ্রমিক সৌদি আরবে গেছেন। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে গেছেন ৮৫ হাজার ৩১৯ জন।

Comments

The Daily Star  | English

The life cycles of household brands

For many, these products are inseparable from personal memory

14h ago