ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরবের যেকোনো শহর ভ্রমণ করা যাবে: সৌদি হজ মন্ত্রী

সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রী ড. তৌফিক আল-রাবিয়াহ বলেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে সব সময়ই দৃঢ় সম্পর্ক ছিল যা আজও অব্যাহত রয়েছে। এই সুসম্পর্কের মূলে রয়েছে সৌদি আরবে কাজ করতে আসা বাংলাদেশিরা।
ট্রানজিট নিয়ে করা যাবে ওমরা হজ: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রী ড. তৌফিক আল-রাবিয়াহ ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান (বাম থেকে) | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

ওমরাহ ভিসা ব্যবহার করে সৌদি আরবের যেকোনো শহর ভ্রমণ করা যাবে বলে জানিয়েছে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রী ড. তৌফিক আল-রাবিয়াহ।

আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

সৌদি মন্ত্রী তৌফিক আল-রাবিয়াহ বলেন, 'আমি আমাদের বাংলাদেশি ভাই ও বোনদের মক্কা ও মদিনায় আসার আমন্ত্রণ জানাতে চাই। এখন আপনাদের আসার জন্য বিভিন্ন প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে। ওমরাহ ভিসার মেয়াদ ৩০ দিন থেকে বাড়িয়ে ৯০ দিন করা হয়েছে। যারা মক্কা ও মদিনা পরিদর্শনে আসবেন, তারা চাইলে রিয়াদ, দাম্মাম বা অন্য যেকোনো শহরে (একই ভিসা ব্যবহার করে) যেতে পারবেন। একটি বড় সংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিক সৌদি আরবের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। প্রায় ২৮ লাখ বাংলাদেশি এখানে কাজ করছেন। আমি মোটামুটি নিশ্চিত, যত বাংলাদেশি ওমরাহ করার জন্য এখানে আসেন, তাদের অন্তত একজন হলেও বন্ধু বা আত্মীয় সৌদি আরবে রয়েছেন, যাদের সঙ্গে দেখা করা এখন আরও সহজ হবে।'

তিনি আরও বলেন,  'নারীরা এখন মাহরামের বাধ্যবাধকতা ছাড়াই মক্কা বা মদিনায় আসতে পারেন। এটি একটি নতুন সুবিধা যা আমরা চালু করেছি। এছাড়াও, ওমরাহ ভিসা সাধারণত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইস্যু করা হয়, যা মূলত একটি ইলেক্ট্রনিক ভিসা। এটি খুবই দ্রুত এবং আপনারা যেকোনো পর্যটন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এর জন্য আবেদন জানাতে পারেন। অথবা আপনারা নুসুক নামের একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সরাসরিও আবেদন জানাতে পারেন। এটি একটি অনলাইন ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম যেখান থেকে ওমরাহ ভিসা সহ সব ধরনের ভিসার আবেদন করা যায় ও থাকার জায়গা খুঁজে বুকিং দেওয়া যায়।'

'পাশাপাশি, আমরা ট্রানজিট ভিসাও চালু করেছি। পশ্চিমের দেশগুলোতে ভ্রমণের সময় সৌদি আরবে যাত্রাবিরতি নেওয়া যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিক ঊর্ধ্বে ৪ দিনের ট্রানজিট ভিসা পেতে পারেন। এই ভিসা ব্যবহার করে তারা মদিনা ছাড়া অন্য যেকোনো শহরে যেতে ও বিমানবন্দরে ফিরে আসতে পারবেন। বিমান টিকিটের অংশ হিসেবে এই সেবা পাওয়া যাবে—এর জন্য আলাদা কোন ভিসা ফি দিতে হবে না। অর্থাৎ, এটি আরও একটি সুবিধা যা আমরা দিচ্ছি', যোগ করেন তিনি।

তিনি আরও জানান, 'সর্বোপরি, আমাদের দেশে আসার জন্য পর্যটক ভিসা সুবিধাও রয়েছে। সৌদি আরবে বসবাসরত যেকোনো বাংলাদেশি অন্য যেকোনো বাংলাদেশিকে আমন্ত্রণ জানানোর ভিত্তিতে এই ভিসা দেওয়া হয়। আমি আবারো জোর দিয়ে বলতে চাই, আরও বেশি বাংলাদেশি মানুষ যাতে আরও সহজে মক্কা-মদিনায় আসতে পারেন, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতেই আমি এখানে এসেছি। এ বিষয়ে সৌদি আরব ও বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের মধ্যে চুক্তি সাক্ষর হবে। এর ফলে ২ দেশের মধ্যে ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়বে। এছাড়াও আমরা ফ্লাইটের খরচ কমানো ও সেবার মান উন্নয়নের বিষয়গুলোও মাথায় রাখছি, যাতে বাংলাদেশে আমাদের ভাই ও বোনেরা সৌদি আরবে আসতে পারেন।'

বক্তব্যের শেষে তিনি বলেন, 'আজ আমি সৌদি রাজার শুভেচ্ছা পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি। বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে সব সময়ই দৃঢ় সম্পর্ক ছিল যা আজও অব্যাহত রয়েছে। এই সুসম্পর্কের মূলে রয়েছে সৌদি আরবে কাজ করতে আসা বাংলাদেশিরা। সৌদি আরবে সবচেয়ে বড় প্রবাসী সম্প্রদায় হচ্ছে বাংলাদেশের। ২ দেশের সম্পর্কে সমুন্নত রাখতে আমি চাই সৌদি সরকারের প্রতিনিধিরা নিয়মিত বাংলাদেশ সফরে আসুক। আমরা জানতে চাই আরও বেশি সংখ্যক বাংলাদেশিদের সৌদি আরবে আসার জন্য আমরা আর কী কী উদ্যোগ নিতে পারি বা সুবিধা চালু করতে পারি। আমরা সৌদি নাগরিকদেরও বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করি, যাতে তারা বাংলাদেশিদের অসাধারণ আতিথেয়তা, ভাল মানুষ ও ভালো আবহাওয়ার সংস্পর্শ আসতে পারে ও ভালো ভালো পণ্য উপভোগ করতে পারেন।' 

Comments