মারধর-ঘুষ

দুমকি থানার ওসিসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ

পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ
পটুয়াখালী
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

পটুয়াখালীর দুমকিতে মারধর, ঘুষ গ্রহণসহ একাধিক অভিযোগ এনে দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুস সালাম ও ২ এসআইসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন এক যুবক। 

গত ১৪ মার্চ পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে লিখিত অভিযোগটি দায়ের করা হলেও আজ বুধবার বিষয়টি জানাজানি হয়। 

অভিযোগটি আমলে নিয়ে প্রাথমিক তদন্তের জন্য আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, দুমকি জনতা কলেজ সড়কের বাসিন্দা সাদমান সাকিবের নামে গত বছর উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা সৈয়দ ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম ও তার মেয়ে রিজোয়ানা হিমেলসহ একটি চক্র উপজেলার মুরাদিয়া ইউনিয়নের মৃত আলী শরীফের মেয়ে খাদিজা শিমুকে দিয়ে ভুয়া কাবিননামা তৈরি করে পটুয়াখালীর নারী নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি যৌতুক মামলা দায়ের করে। 
কাবিনের ঘটনাটি মিথ্যা দাবি করে সাদমান সাকিব পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে পুলিশ সুপার দুমকি থানাকে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলে ওসি আব্দুস সালাম ঘটনাটি তদন্তের জন্য এসআই দেলোয়ার হোসেনকে দায়িত্ব দেন। পরে এসআই দোলোয়ার হোসেন ফোন করে উভয় পক্ষকে থানায় আসতে বলেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাতে সাদমান সাকিব তার খালাতো ভাই বাউফল উপজেলার রাজনগর এলাকার মো. জাকির হোসেনকে নিয়ে দুমকি থানায় আসলে হোসনে আরা বেগমসহ অপরপক্ষের লোকজন এসআই দেলোয়ারের সামনে সাদমান সাকিব ও সাক্ষী জাকির হোসেনকে মারধর করেন। পরে পুলিশ উল্টো সাদমান সাকিব ও জাকির হোসেনকে আটক করেন এবং এসআই সাকায়েত হোসেন বিবাদীদের পক্ষ নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং বিবাদীদের নারী নির্যাতন মামলা করতে পরামর্শ দেন। 

অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, ওসি আব্দুস সালাম তাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। পাশাপাশি ওসি খাদিজা শিমুকে সাদমান সাকিবের পাসে বসিয়ে ছবি তোলার চেষ্টা করেন এবং ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। একপর্যায়ে এসআই সাকায়েত ও এসআই দেলোয়ার হোসেন আটক সাদমান সাকিব ও জাকিরের পরিবারের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে সাদা কাগজে মুচলেকা নেন এবং দুজনকে মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে শেখানো কথা বলিয়ে ভিডিওধারণ করেন। একইসঙ্গে ওসি আব্দুস সালাম কেড়ে নেওয়া মোবাইল ফোন জব্দ তালিকায় না দেখিয়ে নিজের কাছে রেখে তাদেরকে ছেড়ে দেন।
 
এ ঘটনায় সাদমান সাকিব পটুয়াখালী পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে কোনো প্রতিকার না পেয়ে ওসি মো. আব্দুস সালাম, এসআই দেলোয়ার ও সাকায়েত হোসেনসহ ঘটনায় জড়িত ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন।
 
এ বিষয়ে ওসি আব্দুস সালাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যেহেতু বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা হয়েছে, সেখানেই সত্যি মিথ্যা যাচাই-বাছাই হবে।'

পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মামলার বিষয়ে আমি অবহিত আছি। যেহেতু মামলাটি তদন্তাধীন, তাই এ ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করব না। তদন্তেই সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসবে।'

Comments