সুলতানাকে আটক ও হেফাজতে মৃত্যু নিয়ে যে ব্যাখ্যা দিলো র‌্যাব

সুলতানা জেসমিন
সুলতানা জেসমিন। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁর একটি ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিনকে আটকের পর প্রায় দেড় ঘণ্টা র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) সদস্যরা ব্যস্ত ছিলেন তার মোবাইল ফোন থেকে টাকা আদায়ের প্রমাণ ও এ সংক্রান্ত নথি সংগ্রহের কাজে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ১টার দিকে গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

সুলতানাকে আটকের দেড় ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, 'অভিযোগকারী ও সাক্ষীদের উপস্থিতিতে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও আলামত সংগ্রহ শেষে র‌্যাব সদস্যরা জেসমিনকে নিয়ে থানায় মামলা করতে যাচ্ছিলেন।'

খন্দকার আল মঈনের ফাইল ছবি | সংগৃহীত

'কিন্তু পথে জেসমিন অসুস্থ বোধ করলে র‌্যাব সদস্যরা তার শারীরিক অবস্থার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।'

তিনি জানান, র‌্যাব সদস্যরা সুলতানাকে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আটক করে এবং দুপুর ১টা ১৫ মিনিটের দিকে হাসপাতালে ভর্তি করে।

খন্দকার আল মঈন বলেন, 'ওই নারী নিজেই গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে হাসপাতালে প্রবেশ করেছিলেন। এরপরই তার আত্মীয় ও সহকর্মীদের তার অসুস্থতার বিষয়ে অবহিত করা হয় এবং তাদের তত্ত্বাবধানেই হাসপাতালে চিকিত্সা দেওয়া হয়।'

তিনি বলেন, 'সন্ধ্যার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সন্দেহ করে যে ওই নারী হয়তো স্ট্রোক করতে পারে এবং তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে।'

রামেক হাসপাতালে চিকিৎসক সিটি স্ক্যানে স্ট্রোকের লক্ষণ খুঁজে পাওয়ার পর সুলতানাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করে বলে জানান র‌্যাবের এই মুখপাত্র।

সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

খন্দকার আল মঈন বলেন, 'র‌্যাব হেফাজতে ওই নারী অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার ক্ষেত্রে র‌্যাব সদস্যদের কোনো অবহেলা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য র‌্যাব সদর দপ্তরের অভ্যন্তরীণ তদন্ত সেলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।'

'তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে', যোগ করেন তিনি।

কারো গাফিলতি পাওয়া গেছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এটা বলার সময় এখনো আসেনি। মেডিকেল রিপোর্টে সব পরিষ্কার। তদন্ত চলছে। তদন্ত কমিটি তদন্তে কোনো গাফিলতি পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।'

সুলতানার মাথায় আঘাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো তথ্য নেই। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখানে গুরুত্বপূর্ণ এবং তদন্ত চলছে। এর জন্য কিছু সময়ের প্রয়োজন।'

সুলতানাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে তিনি বলেন, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে কর্মরত যুগ্ম সচিব এনামুল হকের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারকরা মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করেছে। এনামুল হক ২০২২ সালের মার্চে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন এই বিষয়ে। এক নারী এনামুল হকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন এই অভিযোগে যে তিনি তার ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে জালিয়াতি করেছেন।

খন্দকার আল মঈন জানান, ১৯ ও ২০ মার্চ প্রতারকরা এনামুল হকের অফিসের সামনে তার নাম ব্যবহার করে টাকা আত্মসাৎ করে। খবর পেয়ে এনামুল হক খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, আল আমিন নামে একজন এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। তিনি আরও জানতে পারেন যে সুলতানা জেসমিন নামে এক নারীও এর সঙ্গে জড়িত।

খন্দকার আল মঈন বলেন, 'অফিসে যাওয়ার পথে এনামুল হক র‌্যাবের একটি টহল দলের কাছে এ সম্পর্কে অভিযোগ করেন এবং র‌্যাব প্রযুক্তিগত তথ্য বিশ্লেষণ করে ওই নারীর অবস্থান শনাক্ত করে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করে।'

তিনি জানান, আটক ও জিজ্ঞাসাবাদের সময় এনামুল হক, র‌্যাবের নারী সদস্য ও আরও কয়েকজন সাক্ষী উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, 'জেসমিন সাক্ষীদের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। জেসমিনের ফোন সচল থাকা অবস্থায় এনামুল হকের ফেসবুক আইডি খোলা পাওয়া গেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা তার মোবাইল থেকে লাখ টাকার ডিসপোট স্লিপ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিবরণও পেয়েছি।'

মামলার আগে গ্রেপ্তারের বিষয়ে তিনি বলেন, 'ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করতে অনুমতি লাগে। অনুমতি নিয়ে বাদী এনামুল হক থানায় মামলা করেন।'

Comments

The Daily Star  | English

CA accords reception to SAFF winning women's team, asks for written demands

During a reception ceremony at the State Guest House Jamuna in the morning today, Chief Adviser Professor Muhammad Yunus asked the players of the Bangladesh team that won the 2024 SAFF Women’s Championship in Nepal last week to submit a list of their demands in writing, assuring them of working on those in the coming days.

1h ago