উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া সংশোধন না হলে নজরদারির সমাজে রূপান্তরিত হব: টিআইবি

বক্তব্য রাখছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক মো. ইফতেখারুজ্জামান | ছবি: সংগৃহীত

উপাত্ত সুরক্ষা আইন (খসড়া) সংশোধন করা না হলে আমরা অত্যন্ত দ্রুত গতিতে একটি নজরদারির সমাজে রূপান্তরিত হব বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক মো. ইফতেখারুজ্জামান।

আজ সোমবার ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপাত্ত সুরক্ষা আইন, ২০২৩ (খসড়া) নিয়ে সংস্থাটি তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক মো. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'আমাদের মূল উদ্বেগের যে জায়গাগুলো রয়ে গেছে, এই আইনের যে মূল ভাবনা—ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা প্রদান করা, তার থেকে সরে গিয়ে ব্যক্তিগত তথ্যের নিয়ন্ত্রণমূলক আইন হতে যাচ্ছে বলে আমরা মনে করছি। এই ব্যক্তিগত তথ্যের নিয়ন্ত্রণমূলক অবস্থানে চলে যাচ্ছে আইনটি, যেভাবে ডিজাইন করা হয়েছে।'

'আমরা মনে করি, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে, এই আইনে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার কথা বলা হচ্ছে, সেটি যেন কোন কোন তথ্য ব্যক্তিগত তথ্য বলা হচ্ছে সেটা যেন চিহ্নিত করা হয়। তা না হলে আইনটি কোনো অবস্থায় গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। জাতীয় মানদণ্ডে তো নয়, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডেও না,' বলেন তিনি।

ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, 'একটি বিশেষ সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে "ব্যতিক্রম"। বেশ কিছু সরকারি কর্তৃপক্ষকে মোটাদাগে পছন্দ অনুযায়ী ব্যতিক্রম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, অর্থাৎ কোনো প্রতিষ্ঠান চাইলেই বলতে পারে আমার জন্য এই আইনটি প্রযোজ্য নয়। আমরা মনে করি, এই আইনে ব্যতিক্রম ব্যাপারটা থাকতে পারে যদি জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়।'

এই আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হতে হবে সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হবে, সরকারই প্রতিষ্ঠিত করবে কিন্তু সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে হতে হবে বলে মত দেন তিনি।

এই আইনের কাজ হবে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা দেওয়া উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'সেখান থেকে সরে গিয়ে যদি আইনটি নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়; সেই ঝুঁকি সৃষ্টি করা হয়েছে, আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করছি, এটি যদি সংশোধন করা না হয় তাহলে আমরা অত্যন্ত দ্রুত গতিতে একটি নজরদারির সমাজে রূপান্তরিত হব।'

সংস্থাটির পরিচালক শেখ মঞ্জুর-ই-আলম বলেন, 'গত ১৪ মার্চ উপাত্ত সুরক্ষা আইন, ২০২৩ এর খসড়া অংশীজনের মতামতের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। টিআইবি গত ২৮ মার্চ ৪১টি সুনির্দিষ্ট সুপারিশ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিবেচনার জন্য পাঠিয়েছিল। এটি আলোচ্য বিষয়ে প্রকাশিত চতুর্থ খসড়া। এর আগের প্রতিটি খসড়ার ওপর টিআইবি বিস্তারিত ব্যাখ্যাসহ মতামত দিয়েছে এবং ২ দফা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের সামনেও তা তুলে ধরেছে। খসড়া প্রণয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা চলমান আলোচনার বিভিন্ন পর্যায়ে টিআইবির বেশ কিছু সুপারিশ মেনে নেওয়া কথা জানিয়েছে।'

'তবে এই চতুর্থ খসড়াতেও দেখা যাচ্ছে, টিআইবির বিভিন্ন প্রস্তাব মেনে নেওয়া হলেও মূল উদ্বেগের জায়গাগুলো থেকেই গেছে। এর কতটা অনিচ্ছাকৃত বা অনভিজ্ঞার কারণে আর কতটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সেই প্রশ্ন করাটা এখন অবান্তর হবে না,' বলেন ইফতেখারুজ্জামান।

তিনি আরও বলেন, 'কতগুলো সুপারিশ মেনে নেওয়া হলো তার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো, কোন সুপারিশগুলো পাশ কাটিয়ে যাওয়া হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Disrupting office work: Govt employees can be punished within 8 days

The interim government has moved to amend the Government Service Act-2018 to allow swift disciplinary action against its employees who will be found guilty of disrupting official activities.

7h ago