মিতু হত্যা

পলাতক কালু ৭ বছর পর গ্রেপ্তার, করতেন নিরাপত্তা কর্মীর কাজ

মাহমুদা খানম মিতু। ফাইল ছবি

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার আসামি খাইরুল ইসলাম কালুকে ৭ বছর পর নগরীর আকবর শাহ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।

শুক্রবার রাতে আকবর শাহ থানার ছিন্নমুল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। সেখানে একটি বাসায় দারোয়ানের কাজ করতেন তিনি। মিতু হত্যাকাণ্ডের চার্জশিট ভুক্ত আসামি তিনি।

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার (মেট্রো) নাইমা সুলতানা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন 'হত্যাকাণ্ডের পর তিনি পালিয়ে বিভিন্ন স্থানে ছিলেন। পরে সেখানে একটি বাড়িতে নিরাপত্তা কর্মীর কাজ নেন। তাকে গ্রেপ্তারের পর রাংগুনিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।'

রাংগুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মাহবুব মিল্কি বলেন 'পাঁচলাইশ থানা ও রাংগুনিয়া থানার মামলায় তার বিরুদ্ধে দুটি পরোয়ানা ছিল। সেই পরোয়ানায় তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে৷'

এর আগে ১৩ মার্চ মিতু হত্যা মামলায় বাবুলসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত।

অন্য আসামিরা হলেন- কামরুল ইসলাম মুসা, এহতেশামুল হক ভোলা ওরফে হানিফুল হক, মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খায়রুল ইসলাম কালু ও মো. শাহজাহান মিয়া। ভোলা জামিনে এবং মুসা হত্যার পর থেকে পলাতক আছেন।

মুসার সঙ্গে মিলেই কালুসহ অন্যরা খুন করে মিতুকে৷ ২০১৬ সালের হত্যাকাণ্ডের পর মুসা ও কালুকে ধরতে সিএমপির পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা করা হয়।

তবে পরিবারের পক্ষ থেকে তখন অভিযোগ করা হয় পুলিশ তাদের সাদা পোষাকে তুলে নিয়ে গেছে। তবে পুলিশ ও তদন্তকারীরা এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

পিবিআই গত বছর বাবুলসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে জানায়, বাবুলই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী। ২ হাজার ৮৪ পৃষ্ঠার চার্জশিটে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ৯৭ জনকে সাক্ষী করে।

বন্দরনগরীর জিইসি এলাকায় ছেলের সামনে স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় ২০১৬ সালের ৫ জুন পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন সাবেক এসপি বাবুল।

২০২১ সালের মে মাসে চট্টগ্রাম পিবিআই মেট্রো অফিসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুল আক্তারকে এনে পরে তাকে তার শ্বশুরের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। পিবিআই বলছে, মামলার পলাতক আসামি এবং এসপি থাকাকালে বাবুলের দীর্ঘদিনের সোর্স কামরুল ইসলাম মুসাকে বাবুল ব্যবসায়িক অংশীদারের মাধ্যমে ৩ লাখ টাকা প্রদান করেন। পিবিআই কর্মকর্তারা জানান, হত্যার পরপরই ৩ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়।

পিবিআই কর্মকর্তারা জানান, বাবুল কক্সবাজারে অতিরিক্ত এসপি হিসেবে থাকাকালে এক নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং সেই সম্পর্কের জের ধরে বাবুল ভাড়াটে খুনি দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটান।

এ বিষয়ে আদালতে বাবুলের ব্যবসায়িক অংশীদার সাইফুল হক এবং পলাতক আসামি মুসার আত্মীয় কাজী আল মামুন সাক্ষ্য দেন।

পিবিআইয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, সাইফুল বলেছিলেন যে তিনি তাদের ব্যবসার লাভের অংশ থেকে বাবুলের অর্থের ব্যবস্থা করেছিলেন এবং মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার মাধ্যমে মুসার কাছে টাকা পাঠিয়েছিলেন।

২০১৬ সালের ৫ জুন মিতুকে ছুরিকাঘাত ও গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর বাবুল বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাত ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Election in first half of April 2026

In his address to the nation, CA says EC will later provide detailed roadmap

2h ago