সিরিজ বোমা হামলা: যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় করা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য তুহিন রেজাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গতকাল ঢাকার তেজগাঁওয়ের রেলগেট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে আজ শুক্রবার প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি জানান, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশে একযোগে সিরিজ বোমা হামলা চালিয়েছিল জেএমবি। ওই দিন সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে দেশের ৬৩ জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার পাশাপাশি ঢাকার ৩৪টিসহ সর্বমোট ৪৫০ স্থানে প্রায় ৫০০ বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। আধঘণ্টার ব্যবধানে চালানো এ সিরিজ বোমা হামলায় ২ জন নিহত এবং ২ শতাধিক মানুষ আহত হয়। এই ঘটনায় করা মামলায় স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল ঝিনাইদহ বিচার শেষে অভিযুক্ত ২১ জনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হলে আসামিদের সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু আসামিরা মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করলে আদালত তাদের অভিযোগপত্র পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৪ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেন এবং ৭ জনকে খালাস করেন। পরবর্তীতে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতা চালানো শুরু করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এ যাবত সাজাপ্রাপ্ত ১৪ জন আসামির মধ্যে গোলাপসহ ১৩ জনকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, ১৭ আগস্ট বোমা হামলার পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গিয়ে ঝিনাইদহ সদরে জঙ্গি ক্যাম্পে কিছুদিন ছিলেন গোলাপ। এরপর মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হলে কিছুদিনের মধ্যে তিনি পালিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। প্রথমে তিনি যাত্রাবাড়ী পরবর্তীতে খিলগাঁও, উত্তরা, মহাখালীসহ বিভিন্ন জায়গায় স্থান পরিবর্তন করে বসবাস করে আসছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে তিনি বিভিন্ন সময় বাসা পরিবর্তন করে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় বসবাস শুরু করেন। ২০২১ সাল থেকে তিনি তেজগাঁও এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকে এবং সেখান থেকেই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
Comments