৩ ভাই-বোনকে হত্যার দায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড

স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

চট্টগ্রামের বোস্তামি এলাকায় ২০ বছর আগে তিন ভাই-বোনকে হত্যার দায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ কামাল হোসেন শিকদার এই রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত দুইজন হলেন—আবুল কাশেম ওরফে জামাই কাশেম এবং ইউসুফ ওরফে বাইট্টা ইউসুফ। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এই মামলার অপর দুই আসামি শিবির ক্যাডার মো. নাছির প্রকাশ ওরফে গিট্টু নাছির এবং মো. ফয়েজ মুন্না র‍্যাবের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হওয়ায় তাদের এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

রায় ঘোষণার পর আদালতের অতিরিক্ত পিপি এম এ ফয়েজ বলেন, 'আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আসামিদের প্রত্যেককে দুই লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।'

'মামলার দুই আসামি জামিনে ছিলেন। আদালত তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠান। আজ রায় ঘোষণার পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়', বলেন তিনি।

এই ঘটনায় নিহত সাইফুল ইসলাম ও আসামি গিট্টু নাছির ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। তাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ ছিল। আসামি কাশেম ও ইউসুফের সঙ্গে সাইফুলের জমি নিয়ে বিরোধও ছিল।

আসামি গিট্টু নাছির এবং কাশেম ও ইউসুফ নিহত সাইফুলের সঙ্গে নিজেদের বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটাতে একজোট হয়।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার দক্ষিণ পাহাড়তলী এলাকায় ৩৬ শতক জমির মালিকানা নিয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার সাইফুল ইসলাম, তার ভাই মো. আলমগীর ও বোন মনোয়ারার বেগম মনির সঙ্গে আসামি ইউসুফ ও কাশেমের বিরোধ ছিল।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০০৪ সালের ২৯ জুন নগরের বালুচরা এলাকায় সাইফুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করেন আসামিরা। আসামিদের দেখে মনোয়ারা বেগম মিনু চিৎকার দিলে তাকে প্রথমে গুলি করেন ফয়েজ মুন্না। এতে মনোয়ারা ঘটনাস্থলেই মারা যান।

বোনের চিৎকার শুনে আলমগীর ঘর থেকে বের হয়ে আসেন। সেসময় আসামি ইউসুফ আরেক আসামি ফয়েজ মুন্নাকে নির্দেশ দেয় আলমগীরকে গুলি করতে। এর পরপরই আলমগীরকে গুলি করেন মুন্না। আলমগীর পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটে পড়েন। পরে ২০০৪ সালের ১৯ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

আলমগীর মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সাইফুল ইসলাম ঘর থেকে বের হয়ে আসে। সেসময় আসামি আবুল কাশেমের নির্দেশে গিট্টু নাছির সাইফুল ইসলামের কপালে, বুকে, পেটে ও হাতে গুলি করে। তখনই সাইফুল ইসলাম মারা যান। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত সাইফুল ইসলামের স্ত্রী আয়েশা আক্তার শিল্পী বাদী হয়ে থানায় মামালা করেন।

২০০৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

অভিযোগপত্রে ইউসুফ, কাশেম, গিট্টু নাছির ও ফয়েজ মুন্নাকে অভিযুক্ত করা হয়। পরে দুই আসামি মারা গেলে তাদের বাদ দেওয়া হয়। এই মামলায় ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত রায় দেন।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh Bank governor Ahsan H Mansur's remarks

Bangladesh in ‘intensive discussion’ with UK to recover laundered money: BB governor

Mansur said Bangladesh had requested mutual legal assistance from several countries, including the UK

1h ago