এমপি আনার হত্যা: আ. লীগের আরও এক নেতা জড়িত থাকতে পারেন
![](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/images/2024/06/11/mp_anwarul_azim_anar_1.jpg?itok=uNJh4X_G×tamp=1718078249)
কলকাতার নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডে ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের আরও অন্তত একজন শীর্ষ নেতা জড়িত থাকতে পারেন বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
সাত দিনের রিমান্ডে থাকা ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদে এই তথ্য পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন তারা।
হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়াও তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জেলার ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ এক নেতার জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করেছিলেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা শাখার সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলমও স্বীকার করেছেন যে, গত নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের যারা আনারের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছিলেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।
তিনি বলেন, আনোয়ারুল আজীমের মৃত্যুর বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো নিশ্চিত না হওয়া সত্ত্বেও অনেকেই ইতোমধ্যে ঝিনাইদহ-৪ আসনে প্রার্থী হতে অভ্যন্তরীণ প্রচারণা শুরু করেছেন।
তদন্ত সংস্থার একটি সূত্র জানায়, তারা ইতোমধ্যে সন্দেহভাজন আওয়ামী লীগ নেতাদের তালিকা তৈরি করছে, যারা বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন এবং আজীমের বিরুদ্ধে ছিলেন।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, 'তদন্ত শেষ হোক। অনেককে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে বেশি কিছু বলা উচিত বলে আমরা মনে করি না।'
'আমরা সত্য উদঘাটনের খুব কাছাকাছি চলে এসেছি। লাশ নিশ্চিত হলে আমরা অনেক কিছুই প্রকাশ করতে পারব। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তদন্তে যুক্ত হয়েছে। আনোয়ারুলের লাশ অনেক খণ্ড-বিখণ্ড করা হয়েছে বলে যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে বলেছে। তবে সেগুলো কোথায় প্রথমে তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। উদ্ধার হওয়া অংশগুলোর ডিএনএ টেস্ট ছাড়া বোঝা যাবে না যে এগুলো আমাদের সংসদ সদস্যের কি না', বলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যাওয়া হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আপনারা দেখেছেন দুটি মামলা হয়েছে। যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানেই একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় এমপির মেয়েও ঢাকায় মামলা করেছেন। উভয় দেশই ঘটনাটির সঙ্গে জড়িত।'
'যেহেতু এটা তাদের দেশে (ভারতে) ঘটেছে, তাই অভিযুক্তদের ফিরিয়ে আনা এবং কারাগারে রাখার দায়িত্ব তাদের। আমি যতদূর জানি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে। সেক্ষেত্রে ভারত সরকার সুবিধা পেতে পারে।'
তিনি আরও বলেন, উদ্ধার হওয়া দেহাংশগুলো যে আজিমের, সেটার প্রমাণ পাওয়াটা প্রয়োজন। এজন্য ডিএনএ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদি তার মেয়ের ডিএনএ মিলে যায়, তাহলে আমরা নিশ্চিত হতে পারব যে সেটি আজিমই ছিলেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ২৮ মে যে ফ্ল্যাটে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, সেখানকার সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হওয়া মাংস মানুষের বলে তাদের কাছে ইতোমধ্যেই প্রমাণ রয়েছে।
অন্যদিকে গ্রেপ্তার আমানউল্লাহ ও তার ভাগ্নে তানভীর ভূঁইয়া ঢাকার চিফ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর হয়।
বাবু ছাড়াও বাংলাদেশে গ্রেপ্তার শিলাস্তি রহমান, আমানুল্লাহ ও তানভীর ভূঁইয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে কারাগারে আছেন।
এই ঘটনায় জিহাদ হাওলাদার ও সিয়াম হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি।
Comments