গণহত্যার মামলায় গ্রেপ্তার পুলিশ কর্মকর্তা শাহিদুল কারাগারে

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ঢাকার সাভার অঞ্চলে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে দায়ের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) বিচারপতি মো. গোলাম মোর্তুজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

এর আগে পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করে। শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষ শাহিদুল ইসলামকে গণহত্যার অভিযোগে দায়ের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে।

আদালত প্রাঙ্গণে প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, 'শাহিদুল ইসলামকে গত রাতে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তারের পর শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয় এবং পরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে আজ তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ।'

তিনি আরও জানান, গত ২৭ অক্টোবর শাহিদুলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল আদালত। যে ১৭ জন পুলিশ কর্মকর্তা বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল, তার মধ্যে শাহিদুল ১৬তম ছিলেন।

গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, 'তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, সাভার অঞ্চলে শতাধিক—প্রায় ২০০ ছাত্রকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা; এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ছিল আসাদুল ইয়ামিন নামে এক ছাত্র, যাকে গুলিবিদ্ধ ও অচেতন অবস্থায় আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি) থেকে অত্যন্ত নির্মমভাবে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। ফেলে দেওয়ার পরে তখনো সে জীবিত ছিল। তাকে টেনে-হিঁচড়ে (রোড) ডিভাইডারের পাশে নেওয়া হয়। আবার চ্যাঙদোলা করে ঢিল দিয়ে রাস্তার আরেক পাশে ফেলে দেয়। তারপর ইয়ামিনের পায়ে গুলি করতে বলে। গুলি না করে তার অচেতন দেহের ওপর টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়। পরবর্তীতে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বাধা দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে তার মৃত্যু হয়। ইয়ামিনকে তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করতে দেওয়া হয়নি।'

'এসব নির্মম ঘটনার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর বাইরে সাভার অঞ্চলে যে প্রায় ২০০ নিহত ও অসংখ্য মানুষকে গুলি করার ঘটনা ঘটেছে, সেই সময় সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার তিনি ছিলেন। আমাদের তদন্ত সংস্থা তদন্ত করে শাহিদুলের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার কারণে আমরা আদালতের কাছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চেয়েছিলাম। গ্রেপ্তার করে তাকে আজকে হাজির করা হয়েছিল। আদালত আজকে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন,' বলেন তিনি।

তাজুল বলেন, 'শাহিদুলের বিরুদ্ধে অনেক মামলা রয়েছে। আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনায় তার সংশ্লিষ্ট আছে কি না সেটাও খতিয়ে দেখা হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Students to resist AL event today

The student movement against discrimination will hold a mass gathering at Zero Point in the capital’s Gulistan today, demanding trial of the Awami League.

3h ago