বিডিআর হত্যাকাণ্ড: হাসিনাসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ

শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেছে নিহত সেনাকর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরা।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের কাছে এই অভিযোগ জমা দেওয়া হয়।

অভিযোগে শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ৫৮ জনের নাম রয়েছে।

পিলখানায় হত্যাকাণ্ডে নিহত সেনাকর্মকর্তাদের পরিবারের ২০ জন সদস্য এই অভিযোগ জমা দেন।

অভিযোগ দায়ের করে নিহত পরিবারের সদস্যরা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন।

অভিযোগকারীরা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, 'শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় স্বার্থবিরোধী রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে সর্বপ্রথম বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুই শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, তথা; বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশ রাইফেলস বিডিআর ধ্বংসের নীলনকশা প্রণয়ন করে। সেই লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সর্বপ্রথম শিকারে পরিণত হয় বাংলাদেশ রাইফেলসে তৎকালীন কর্মরত পেশাদার, সৎ-দক্ষ, মেধাবী ও দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর অফিসারদের একটি অংশ। শেখ হাসিনা সেনাবাহিনীর সেইসব দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদেরকে নিজের স্বৈরশাসন পাকাপোক্ত করার লক্ষ্যে প্রথম ও প্রধানতম অন্তরায়-বিপত্তি হিসেবে চিহ্নিত করে উক্ত সেনা অফিসারদের এবং তাদের পরিবারের উপর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সংঘটন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করার মাধ্যমে নিজের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।'

এতে আরও বলা হয়, শেখ হাসিনা ও তারিক আহমেদ সিদ্দিকির নেতৃত্ব, পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অন্যান্য আসামিরা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শেখ হাসিনার পরিকল্পনাধীন স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠার পথ সহজ ও চিরস্থায়ী করতে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত পিলখানা সদর দপ্তরে তৎকালীন বিডিআরে কর্মরত নিরস্ত্র সেনা কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার উদ্দেশ্যে তাদের উপর পরিকল্পিতভাবে পদ্ধতিগত উপায়ে নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালায়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, তারা সেখানে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করে। এই ঘটনায় মোট ৭৪ জন প্রাণ হারায়।

এই মানবতাবিরোধী ও গণহত্যার মাধ্যমে সমগ্র সেনাবাহিনী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শেখ হাসিনা ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের মতাদর্শ বাস্তবায়ন, লুটপাট, রাষ্ট্রবিরোধী ও সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ডের কোনো রকম প্রতিবাদ করার সাহস ও শক্তি হারিয়ে ফেলে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে।

পিলখানা গণহত্যার তদন্ত ও বিচার সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

সেইসঙ্গে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে যেসব নিরীহ, নিরপরাধ ও নির্দোষ বিডিআর জওয়ানদেরকে বছরের পর বছর কারাগারে আটক রাখা হয়েছে তাদেরকে মুক্তি দিতে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। 

Comments

The Daily Star  | English

Tribute to July uprising: Drone show lights up Dhaka's sky

In 12 vivid motifs, the July uprising came alive, tracing the heroism of Abu Sayed and the stirring role of women in the movement

13h ago