আন্দোলনে হামলা: আওয়ামীপন্থী ৬৪ আইনজীবী কারাগারে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হামলা, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আওয়ামী লীগপন্থী ৬৪ আইনজীবীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
একই মামলায় ঢাকা বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আবু সাঈদ সাগর ও অপর ১৮ নারী আইনজীবীকে জামিন দিয়েছে আদালত।
আসামিদের জামিন আবেদন নাকচ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন আজ রোববার এ আদেশ দেন।
আদালতের পিপি ওমর ফারুক ফারুকী দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আসামিদের মধ্যে আরও আছেন ঢাকা বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান মানিক, গাজী শাহ আলম, মাহবুবুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান খান রাচি, সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম প্রমুখ।
আসামিরা আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীদের মাধ্যমে জামিন আবেদন জমা দেন।
শুনানিকালে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতকে জানান, তাদের মক্কেলরা হাইকোর্ট থেকে আট সপ্তাহের জন্য আগাম জামিন পেয়েছেন।
আগাম জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। আদালতের আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তারা আদালতে আত্মসমর্পণ করে মামলায় জামিন আবেদন করেছেন বলে উল্লেখ করেন আইনজীবীরা।
তবে প্রসিকিউশন এ আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, অভিযুক্ত আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো গুরুতর। তাই তাদের জামিন আবেদন খারিজ করে কারাগারে পাঠানো উচিত।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক আসামিপক্ষের জামিন আবেদন খারিজ করে তাদের কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এরপর অবশ্য তিন আসামি আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যান বলে পিপি জানান। তাদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এরপর আদালতের আদেশ অনুযায়ী ওই তিনজনকে ছাড়া বাকি ৬১ জনকে কারাগারে পাঠানো হয় বলেও জানান পিপি ওমর ফারুক।
গত বছরের ৪ আগস্ট কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় হামলা, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আওয়ামী লীগপন্থী ১৪৪ আইনজীবীর বিরুদ্ধে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী বাবু ৬ ফেব্রুয়ারি এ মামলা করেন।
মামলার বিবরণীতে বলা হয়, গত বছরের ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা ঢাকা বার অ্যাসোসিয়েশন ভবনের বাইরে অবৈধভাবে দলবদ্ধভাবে জড়ো হয়ে অস্ত্র, লাঠি ও বিস্ফোরক দিয়ে আইনজীবী ও জনসাধারণের ওপর আক্রমণ করেন। তারা বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের কক্ষ ভাঙচুর করেন।
আদালতের অধিবেশন শেষে বার অ্যাসোসিয়েশনে ফেরার সময় বাদী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী বাবুর ওপরও হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
মামলার অন্যান্য আসামিদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক সদস্য এবং ডিবিএর সাবেক সভাপতি সৈয়দ রেজাউর রহমান, কাজী নাজিবুল্লাহ হিরু এবং মুখলেছুর রহমান বাদল, আবদুর রহমান হাওলাদার, মিজানুর রহমান মামুন, গাজী শাহ আলম, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ডিবিএর সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া জোবায়ের, ফিরোজুর রহমান মন্টু, আসাদুজ্জামান খান এবং সাবেক মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আবু।
Comments