সাবেক সিইসি নূরুল হুদা ৪ দিনের রিমান্ডে

নূরুল হুদা। ছবি: সংগৃহীত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনিয়ম ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে করা মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আজ সোমবার শুনানি শেষে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।

আদালত পুলিশের এক উপপরিদর্শক (এসআই) বলেন, নূরুল হুদাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে নূরুল হুদাকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালত কক্ষে আনা হয়। এরপর তার হেলমেট ও হাতকড়া খুলে ফেলা হয়। এর সাত মিনিট পর ম্যাজিস্ট্রেট তার চেয়ারে বসেন।

বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নূরুল হুদার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করার পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করে রাষ্ট্রপক্ষ।

ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী যখন রিমান্ড আবেদনের পক্ষে বলছিলেন, কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা নুরুল হুদাকে তখন বিচলিত দেখাচ্ছিল।

শুনানিতে আসামিপক্ষের এক আইনজীবী আদালতকে বলেন, তার মক্কেলের (নুরুল হুদা) বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সবই দণ্ডবিধির জামিনযোগ্য ধারা। মামলায় আইনি ত্রুটি রয়েছে; তাই এ মামলায় তাকে রিমান্ডে নিলে তা আইনের পরিপন্থী হবে।

বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে আদালত কক্ষে কথা বলেন নূরুল হুদা।

আদালতকে তিনি বলেন, নির্বাচন পরিচালনায় ১৫-১৭ লাখ লোক সম্পৃক্ত ছিল। প্রত্যন্ত অঞ্চলে কী ঘটেছে তা ঢাকা থেকে নজরদারির কোনো সুযোগ নেই।

এর আগে গতকাল রাতে উত্তরার বাসা থেকে নূরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে অনিয়ম ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কে এম নূরুল হুদা, কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেছে বিএনপি।

এর আগে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন খানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাছির উদ্দীনের কাছে মামলার আবেদনের অনুলিপি পৌঁছে দেন।

বিএনপির অভিযোগ, ২০১৪ সালের দশম, ২০১৮ সালে একাদশ এবং ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের নেতাসমর্থকদের মিথ্যা মামলা, অপহরণ ও হুমকি দিয়ে টার্গেট করা হয়েছে। এতে বলা হয়, নির্বাচনে যাতে অংশ নিতে না পারে, সেজন্য অনেককে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হয়েছে।

বিএনপির ভাষ্য, এই মামলার আসামিরা তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নামও রয়েছে।

মামলার আসামিদের মধ্যে আরও রয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার, জাবেদ পাটোয়ারী ও শহিদুল হক, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার বেনজীর আহমেদ, স্পেশাল ব্রাঞ্চের সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম। একইসঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক প্রধানকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে।

বিএনপি বলেছে, এই ব্যক্তিরা ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কারচুপির জন্য দায়ী।

Comments

The Daily Star  | English

The life cycles of household brands

For many, these products are inseparable from personal memory

14h ago