রিয়া গোপের মৃত্যুর ১১ মাস পর পুলিশের মামলা, আসামি অজ্ঞাত ২০০

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় চারতলা বাড়ির ছাদে খেলতে গিয়ে গুলিতে ৬ বছর বয়সী রিয়া গোপের মৃত্যুর ১১ মাস পর মামলা করেছে পুলিশ।
গতরাতে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু রায়হান।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাসির আহমদ বলেন, 'মামলায় ১৫০ থেকে ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। মামলাটি ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে করার কথা ছিল, দীর্ঘ সময়েও তা না হওয়াতে পুলিশ মামলা করেছে।'
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত বছরের ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের দমনে পুলিশের পাশাপাশি সড়কে নেমে আসেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের ওই সময়ের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায় তার অনুসারী আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কয়েকশ নেতা-কর্মী। শহরের প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়কে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলি ছুড়তে থাকেন তারা।
সেদিন ধারণ করা একাধিক ভিডিও ও ছবিতে শামীম ওসমান, তার ছেলে ইমতিনান ওসমান অয়ন, ভাতিজা আজমেরী ওসমান, শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটু, ছেলে অয়নের শ্বশুড় ফয়েজউদ্দিন লাভলু, লাভলুর ছেলে মিনহাজুল ইসলাম ভিকি, শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ অনুসারী আওয়ামী লীগ নেতা শাহ নিজাম, ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুর রহমান রিয়াদ, রাফেল প্রধান, কাওসার আহমেদ, সোহানুর রহমান শুভ্রসহ কয়েকজনকে গুলি চালাতে দেখা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা বলেন, সেদিন ছিল শুক্রবার, জুমার নামাজের পরপরই চাষাঢ়া থেকে গাড়িবহর নিয়ে বের হন শামীম ওসমান৷ পরে বঙ্গবন্ধু সড়কের অন্তত দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কয়েক দফায় মহড়া দিয়ে গুলি চালান তারা। অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও ধারাল রাম দা, চায়নিজ কুড়ালও ছিল হামলাকীদের হাতে।
ওই সময় থেমে থেমে পুলিশও আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ও টিয়ার গ্যাস ছোড়ে।
ঘটনার দিন বিকেলে বঙ্গবন্ধু সড়কের পাশে নয়ামাটি এলাকায় চারতলা বাসার ছাদে খেলছিল রিয়া গোপ। বাইরে গোলাগুলির কারণে পরিস্থিতি খারাপ দেখে মেয়েকে ছাদ থেকে নামাতে যান বাবা দীপক কুমার গোপ। কিন্তু কোলে নিতেই একটি গুলি এসে লাগে রিয়ার মাথায়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশুটি।
Comments