সত্য প্রকাশের শর্তে ক্ষমা পাবেন ‘রাজসাক্ষী’ চৌধুরী মামুন

চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে সম্পূর্ণ সত্য প্রকাশ করার শর্তে ক্ষমা করা হবে বলে আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার দেওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের লিখিত আদেশ শনিবার প্রকাশ করা হয়।

আজ রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার এএসএম রুহুল ইমরান দ্য ডেইলি স্টারকে ওই আদেশের তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, '২০২৫ সালের আইসিটি-বিডি মামলা নং ০২-এর আদেশ নং ০৭ হিসেবে ১০ জুলাই আদেশটি জারি করা হয়।'

'ইতোমধ্যে আদেশের অনুলিপি কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে,' বলেন তিনি।

ট্রাইব্যুনালের আদেশে বলা হয়েছে, 'শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩(২)(এ), ৩ (২)(জি) ৩(২)(এইচ), ৪(১), ৪(২), ৪(৩) ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।'

আদেশে আরও বলা হয়েছে, 'অভিযোগ গঠনের পর অভিযুক্ত চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে অভিযোগ গঠনের আদেশ পড়ে শোনানো হয়। এসময় তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, তিনি দোষ স্বীকার করবেন, নাকি নির্দোষ। তখন চৌধুরী মামুন দোষ স্বীকার করে বলেন সংশ্লিষ্ট অপরাধগুলো এবং অপরাধ সংঘটনে তিনি জড়িত। তিনি অন্য সকল ব্যক্তি যথা প্রধান আসামি বা সহায়তাকারী সম্পর্কে তার জানা পূর্ণাঙ্গ এবং সত্য প্রকাশ করতে চান।'

এসময় অভিযুক্তের পক্ষে তার আইনজীবী একটি আবেদন দাখিলের মাধ্যমে তাকে ক্ষমা করার জন্য অনুরোধ করেন।

ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অভিযুক্তকে ক্ষমা করার আবেদনে সম্মতি দেন এই শর্তে যে, তিনি পূর্ণাঙ্গ সত্য প্রকাশ করবেন। কারণ এই ধরনের সত্য প্রকাশ অপরাধ প্রমাণ এবং বিচারের জন্য সহায়ক হবে।

আদেশে বলা হয়েছে, 'ট্রাইব্যুনাল অভিযুক্ত চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের ক্ষমা চাওয়াকে যথাযথ মনে করে এবং সত্য প্রকাশ করলে সেই অনুযায়ী তাকে ক্ষমা করা হবে। আদালত আশা প্রকাশ করেন, তিনি সংঘটিত অপরাধের সাথে সম্পর্কিত তার জ্ঞানের মধ্যে থাকা সব ঘটনা, পরিস্থিতি এবং সংশ্লিষ্ট অপরাধের সঙ্গে জড়িত সকল ব্যক্তি, প্রধান আসামি বা সহায়তাকারী সম্পর্কে তার জানা সকল তথ্য ও সত্য প্রকাশ করবেন। চৌধুরী মামুন এই আদালতের শর্তগুলো মেনে নিয়েছেন। আদালত এই শর্ত সাপেক্ষে তাকে সুবিধাজনক সময়ে বিচারে সাক্ষী হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকবে।'

আদেশে বলা হয়েছে, 'যেহেতু অভিযুক্ত চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন সত্য প্রকাশে সাক্ষী হয়েছেন, সেজন্য তাকে কারাগারে নিরাপত্তার স্বার্থে অন্য বন্দীদের থেকে পৃথক করা প্রয়োজন। তাই সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষকে অভিযুক্ত চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে তার নিরাপত্তার স্বার্থে অন্য বন্দীদের থেকে আলাদা করে আটক রাখার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।'

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার অভিযোগ গঠনের শুনানিকালে ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় হাজির থাকা আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন নিজের বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগ স্বীকার করে ঘটনার সত্য উদঘাটনে রাজসাক্ষী হতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। পরে তার আইনজীবী এ বিষয়ে আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করেন। পাশাপাশি মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ৩ আগস্ট এবং সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ৪ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Threat of fresh Rohingya influx looms as clashes erupt in Myanmar

Gunfire and explosions were heard late Friday night from villages across the border in Myanmar opposite Whykong union in Teknaf upazila of Cox’s Bazar. Residents, gripped by panic, reported that this was the most intense gunfire they had heard in months.

2h ago