অনীহা দূর করে মানুষকে ভোটকেন্দ্রে আনার দায়িত্ব প্রার্থীদের: ইসি রাশেদা সুলতানা

তিনি বলেন, ‘ভোট নিয়ে সংশয়ের কোনো কারণ নেই। আমরা কথায় নই, কাজে বিশ্বাসী।’
 রাশেদা সুলতানা
মতবিনিময় সভায় রাশেদা সুলতানা। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, মানুষ শক্তি প্রয়োগকে ভালোভাবে নেয় না। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ক্ষেত্র তৈরি করছে। সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন শুধু নির্বাচন কমিশন চাইলেই হবে না। সবারই দায়িত্ব রয়েছে। ভোটারদের উৎসাহিত করে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসতে প্রার্থীদের ভূমিকা রাখতে হবে।

আজ শুক্রবার পাবনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে পাবনার পাঁচটি আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে নির্বাচন কমিশনার এসব কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখানোসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরেন এবং কমিশনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

রাশেদা সুলতানা বলেন, 'ভোট নিয়ে মানুষের অনীহা দূর করে তাদের ভোটকেন্দ্রে আনার দায়িত্ব প্রার্থীদের। আর ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদের। ভোটারদের আশ্বস্ত করতে চাই, আপনারা নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে আসবেন এবং নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। কেউ হুমকি দিলে বা বাধা দিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা নির্বাচন কমিশন চাই এবারের নির্বাচন একটা অবাধ সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক। সেই লক্ষ্যে কাজ করছে কমিশন। প্রার্থীদের সেই বার্তাই দেওয়া হচ্ছে। যাতে তারা ভোটারদের নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসেন। ভোট নিয়ে সংশয়ের কোনো কারণ নেই। আমরা কথায় নই, কাজে বিশ্বাসী।'

মতবিনিময় সভায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার দেলোয়ার হোসেন, রাজশাহী বিভাগীয় উপ মহা পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান, পাবনার জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মু. আসাদুজ্জামান, পুলিশ সুপার মো. আকবর আলি মুন্সি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলমসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন পাবনার ৫ আসনের প্রার্থীরা।

সভায় পাবনা-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ অভিযোগ করেন, 'জনগণের মাঝে ভোট দেওয়া নিয়ে সন্দেহ আছে। নির্বাচনকে কলুষিত করতে পারে এমন চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। নৌকার প্রার্থী পর্যাপ্ত সুযোগ পেলেও আমার নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়নি।'

ভোট সুষ্ঠু করতে প্রশাসন কাজ করছে, কিন্তু মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন কম বলে অভিযোগ করেন তিনি।

পাবনা-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ মাস্টার বলেন, 'ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। শহর থেকে কিছু লোক এলাকায় গিয়ে ভোটারদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। আমার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। প্রশাসনকে অভিযোগ দেওয়া হলে তারা শুধু শোকজ দিচ্ছে, কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।'

পাবনা-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস অভিযোগ করেন, 'নৌকার বাইরে ভোট দিলে সরকারি সুবিধা বন্ধ হয়ে যাবে বলে হুমকি দিচ্ছে নৌকার সমর্থকরা।  স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে যারা কাজ করতে চাচ্ছেন তাদের বিএনপি-জামাত বলে পুলিশের তালিকাভুক্ত করা হবে বলেও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।'

যারা ভোটারদের ভয় দেখাবে তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার বলেন, 'যোগ্য লোককে নির্বাচনী কেন্দ্রে এজেন্ট নিযুক্ত করেন, যাতে প্রার্থীর পক্ষে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে।'

এর আগে নির্বাচন কমিশনার প্রিজাইডিং অফিসারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন তিনি।

Comments