মমতাজ বেগমের সমর্থকদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ
মানিকগঞ্জ-২ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মমতাজ বেগমের সমর্থকদের বিরুদ্ধে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদ আহমেদ টুলুর সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল রোববার বিকেলে ও সন্ধ্যায় হরিরামপুর উপজেলা চত্বরে দুই দফায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এতে কমপক্ষে ছয়জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে হৃদয় (১৮) নামে একজনকে হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত হৃদয় বলেন, 'জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক আবিদ হাসান বিপ্লবের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হলে তিনি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমানকে ডেকে আনেন। পরে লুৎফরের নেতৃত্বে আমার ওপর হামলা হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় সন্ধ্যার পর উপজেলা চত্বরে আমাদের আরও পাঁচজনের ওপর হামলা হয়।'
দ্বিতীয় দফায় হামলায় আহত মাসুদুর রহমান বলেন, 'আমরা উপজেলা চত্বরে চায়ের দোকানে বসে ছিলাম। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলজার হোসেন বাচ্চু, বলড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিন কুন্নু, সরকারি বিচারপতি নুরুল ইসলাম কলেজের সাবেক ভিপি পলের নেতৃত্বে নুরুল ইসলাম কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক দেলোয়ারসহ ১০-১৫ জন লাঠি-সোটা দিয়ে আমাদের ওপর হঠাৎ হামলা করে। হামলায় আমি ছাড়াও আহত হন যুবলীগ নেতা আনোয়ার মেম্বার, আলমাস মেম্বার, আবুল মেম্বার ও আফজাল।'
এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলজার হোসেন বাচ্চু।
তিনি বলেন, 'নৌকার নির্বাচনের কাজ শেষে জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক আবিদ হাসান বিপ্লব বাড়ি যাওয়ার পথে উপজেলা চত্বরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমানের ছেলে অস্ত্র ঠেকিয়ে আমাকে হুমকি দিয়েছে। এ বিষয়ে আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।'
হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহনুর এ আলম বলেন, 'হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।'
মমতাজ বেগমের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী আবিদ হাসান বিপ্লব সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার রহমানের কাছে নিজের নিরাপত্তা চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার রহমান বলেন, 'আবিদ হাসান বিপ্লবের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আর বিকেলে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক মার্কার সমর্থকদের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনায় মারধরে একজন আহত হয়েছে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।'
মমতাজ বেগম ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য হন। এর আগে ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর তিনি সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য হন। এবার তিনি তৃতীয়বারের মতো দলের মনোনয়ন পেয়েছেন।
এবারের নির্বাচনে তার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান শফিউল আরেফীন টুটুল (মোড়া); দুইবারের সিংগাইর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সদস্য মুশফিকুর রহমান খান হান্নান (কেটলি); জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ দেওয়ান শফিউল আরেফীন টুটুলের আপন চাচাতো ভাই দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু (ট্রাক) এবং স্বেচ্ছাসেবকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও প্রয়াত সংসদ সদস্য সামসুদ্দিন আহমেদের ছেলে সাহাবুদ্দিন আহমেদ চঞ্চলসহ (ঈগল) নয়জন প্রার্থী।
Comments