৪৭ হাজার কারাবন্দির মধ্যে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিয়েছেন ১০ জন

আগামীকাল দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের ৬৮টি কারাগারের অন্তত ৮৬ হাজার বন্দি এবার পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেয়েছেন।

তবে দ্য ডেইলি স্টার সারা দেশের ৩৪টি কারাগারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পেরেছে, ওই সব কারাগারের ৪৭ হাজারের বেশি বন্দি মধ্যে মাত্র ১০ জন তাদের ভোট দিয়েছেন।

১০ বন্দির মধ্যে সাত জন নারায়ণগঞ্জ কারাগারের, দুই জন ময়মনসিংহের ও একজন মৌলভীবাজারের।

নারায়ণগঞ্জের জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন জানান, কারাগারে প্রায় ১ হাজার ৬৭০ জন বন্দি রয়েছেন।

'আমরা গত মাসে লাউডস্পিকারের মাধ্যমে বন্দিদের জানিয়েছিলাম যে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে তারা ভোট দিতে পারবেন। প্রথমে প্রায় ৫০ জন বন্দি ভোট দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু পরে তাদের অনেকেই আর দেননি,' বলেন তিনি।

মোকাম্মেল হোসেন বলেন, পোস্টাল ভোট দেওয়ার জন্য একজন বন্দিকে তার এনআইডি নম্বর, ভোটার নম্বর এবং ভোটকেন্দ্রের বিবরণ জমা দিতে হয়। এই তথ্য জমা হলে জেল কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে আবেদন পাঠায়।

'এই সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে, পোস্টাল ব্যালট জেলে পাঠানো হয়। এরপর বন্দি গোপনে ভোট দেন এবং ব্যালট আবার পোস্টাল সার্ভিসের মাধ্যমে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ফেরত পাঠানো হয়' বলে জানান তিনি।

ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রায় ১ হাজার ৮০০ বন্দি রয়েছেন এবং তাদের মধ্যে মাত্র দুজন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার জাহানারা বেগম। ময়মনসিংহ বিভাগের পাঁচটি কারাগারে প্রায় ৫ হাজার ২০০ বন্দি রয়েছেন

সিলেট রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. সগীর মিয়া জানান, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জে চারটি জেলা কারাগারের মধ্যে ৬৭৭ জন বন্দির মধ্যে মৌলভীবাজারের মাত্র একজন ভোট দিতে আগ্রহ দেখিয়েছেন।

তিনি বলেন, 'এ বছর প্রথমবারের মতো আমরা এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গিয়েছি। এর জন্য, এটি আমাদের জন্য কিছুটা জটিল ছিল।'

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রায় ১০ হাজার বন্দি থাকলেও তাদের কেউই ভোটের জন্য আবেদন করেননি।

'কয়েদিরা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে কোনো আগ্রহ দেখায়নি কারণ প্রক্রিয়াটি ঝামেলাপূর্ণ,' বলেন সিনিয়র জেল সুপারিনটেনডেন্ট সুভাষ কুমার ঘোষ।

গাজীপুরের পাঁচটি কারাগারের প্রায় ১০ হাজার বন্দির মধ্যে কেউই ভোট দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেননি বলেও জানান কর্মকর্তারা।

একই চিত্র পাওয়া গেছে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি প্রিজন আলতাব হোসেন বলেন, 'পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, কুমিল্লা ও নোয়াখালী কারাগারে প্রায় ১৬ হাজার বন্দি ও কয়েদি রয়েছেন। কিন্তু কেউই পোস্টাল ভোট দিতে চাননি।

বরিশাল বিভাগের ছয়টি কারাগারে ২৬০০ এর বেশি বন্দি রয়েছে এবং তাদের কেউই পোস্টাল ভোটে আগ্রহ দেখায়নি।

কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক কর্নেল শেখ সুজাউর রহমান বলেন, 'আমরা পোস্টাল ব্যালটের বিষয়ে গত বছরের নভেম্বরে সারা দেশের ৬৮টি কারাগারে তথ্য প্রচার করেছি এবং জেলা কারা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে।'

সূত্র জানায়, পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ১৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করতে হয়। আবেদনপত্রে ভোটারের নাম, ঠিকানা এবং ক্রমিক নম্বর উল্লেখ করতে হয়।

আবেদন করার পর রিটার্নিং অফিসার পোস্টাল ব্যালট পেপার এবং একটি খাম ভোটারকে পাঠান। তারপর ভোটার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের ভোট দেওয়ার পরে খামটি ফেরত পাঠান।

মূল ফলাফলের সাথে প্রাপ্ত ব্যালটের ফলাফল যোগ করে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Threat of fresh Rohingya influx looms as clashes erupt in Myanmar

Gunfire and explosions were heard late Friday night from villages across the border in Myanmar opposite Whykong union in Teknaf upazila of Cox’s Bazar. Residents, gripped by panic, reported that this was the most intense gunfire they had heard in months.

5h ago