চনপাড়া

অধিকাংশ কেন্দ্রে তৈমুরের এজেন্ট নেই, বাধা দেওয়ার অভিযোগ

তৈমুর আলম খন্দকার জানান, তার এজেন্টদের চনপাড়ায় কোনো কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। নৌকার সমর্থকেরা তাদের বাধা দিচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জের চনপাড়ার একটি ভোটকেন্দ্র। ছবি: স্টার

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের ছয়টি কেন্দ্রের অধিকাংশ কক্ষে 'কেটলি' প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান ভূঁইয়া ও 'সোনালী আঁশ' প্রতীকের তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকারের এজেন্ট পাওয়া যায়নি।

তবে প্রতিটি কক্ষে 'নৌকা' প্রতীকের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী ও তার ছেলে 'ঈগল' প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী গাজী গোলাম মূর্তজার এজেন্টরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তৈমুর আলম খন্দকার জানান, তার এজেন্টদের চনপাড়ায় কোনো কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। নৌকার সমর্থকেরা তাদের বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

আসনটিতে ৯ জন প্রার্থী রয়েছেন৷ তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতা হওয়ার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে নৌকা, কেটলি ও সোনালী আঁশ প্রতীকের প্রার্থীদের মধ্যে।

অন্য প্রার্থীরা হলেন- 'আলমিরা' প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. হাবিবুর রহমান, 'গোলাপ ফুল' প্রতীকের জাকের পার্টির প্রার্থী মো. জোবায়ের আলম, 'লাঙল' প্রতীকের জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. সাইফুল ইসলাম, 'ট্রাক' প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জয়নাল আবেদীন চৌধুরী, 'চেয়ার' প্রতীকের ইসলামি ফ্রন্ট বাংলাদেশের একেএম শহিদুল ইসলাম।

সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত চনপাড়ার আল আমিন মডেল একাডেমী কেন্দ্রের সাতটি ভোটকক্ষের একটিতেও 'কেটলি' প্রতীকের কোন এজেন্টকে পাওয়া যায়নি। পৌনে দশটার দিকে ৬ নম্বর কক্ষে এক নারী এজেন্টকে পাওয়া যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই নারী বলেন, 'চনপাড়ার প্রতিটি কেন্দ্রেই কেটলির এজেন্ট দেওয়া হইছিল। ভয়ে কেউ আসতে সাহস করেনি৷ আমি নিজেও খুব ভয়ে ছিলাম৷ ১০ মিনিট হইছে সাহস কইরা ঢুকছি।'

এ কেন্দ্রের কোনো কক্ষেই সোনালী আঁশ প্রতীকের প্রার্থী তৈমুর আলমের এজেন্টদের পাওয়া যায়নি৷ এজেন্ট ছিলেন না গোলাপ ফুল, লাঙল ও চেয়ার প্রতীকের এজেন্টদেরও৷

জানতে চাইলে কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদ রানা বলেন, কেন্দ্রটিতে অনেক প্রার্থী এজেন্টই দেননি৷ যারা দিয়েছেন তাদের এজেন্টরা উপস্থিত আছেন৷

চনপাড়ার আল আরাফাহ ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার দুটি পৃথক কেন্দ্রের ১০টি কক্ষের চারটিতে কেটলি এবং ছয়টিতে সোনালী আঁশ প্রতীকের এজেন্ট পাওয়া যায়।

একই এলাকার জনকল্যাণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের চারটি কক্ষের একটিতেও কেটলি প্রতীকের এজেন্ট পাওয়া যায়নি৷ তবে তিনটিতে ছিলেন সোনালী আঁশের এজেন্ট৷

নবকিশলয় হাইস্কুল অ্যান্ড গার্লস কলেজের দুটি কেন্দ্রের ১২টি কক্ষের তিনটিতে সোনালী আঁশ ও একটিতে কেটলি প্রতীকের প্রার্থীর এজেন্ট পাওয়া যায়৷

যোগাযোগ করা হলে চনপাড়ার কেন্দ্রগুলোতে তার এজেন্টদের ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়াও৷

তিনি বলেন, 'সকাল থেকে কেন্দ্রগুলোতে আমার এজেন্টদের ঢুকতে বাধা সৃষ্টি করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য শমসের আলী ও তার লোকজন৷ আমি বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি৷ পরে কয়েকজন কেন্দ্রে ঢুকতে পেরেছে, বাকিরা ঢুকতে সাহস করেনি৷'

জনকল্যাণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে কথা হলে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমীর খসরু বলেন, কয়েকজন প্রার্থী তাদের এজেন্ট কেন্দ্রগুলোতে দেননি৷ যারা কেন্দ্রে এসেছেন তারা ভোটকক্ষে আছেন৷

রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বড় অংশের ভোটার চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের বাসিন্দা৷ প্রায় ২২ হাজার ভোটার রয়েছে৷

চনপাড়ায় সকালে শুরুতে ভোটার উপস্থিতি কম দেখা গেলেও বেলা বাড়ার সাথে ভোটার উপস্থিতি বাড়তে থাকে৷

Comments