ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা

নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষনির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ
চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ কেন্দ্রে চলছে ভোটগণনা। ছবি: স্টার

ভোটকেন্দ্র ঘিরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি এবং ভোটারদের স্বল্প উপস্থিতির মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।

আজ রোববার বিকেল ৪টায় ২৯৯টি আসনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়। এখন চলছে গণনা।

বিএনপিসহ বেশকিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছে। তারপরও ২৮টি রাজনৈতিক দলের ১ হাজার ৫৩৪ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ছাড়া, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে আছেন ৪৩৬ জন। রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্রসহ মোট নারী প্রার্থী ৯০ জন।

নির্বাচন কমিশন জানায়, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ২৬৬ জন, জাতীয় পার্টির ২৬৫, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ১৩৫ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) ৬৬ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২ জন, জাতীয় পার্টির (জেপি) ১৩ জন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের ১০ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি প্রথমে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু পরে সমঝোতার ভিত্তিতে জাতীয় পার্টিকে ২৬টি আসন ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া, তাদের ১৪-দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও জেপিকে (মঞ্জু) ৬টি আসন ছেড়ে দিয়েছে ক্ষমতাসীনরা।

ভোটের মাঠে না থাকলেও, সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে তারা হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে।

এ অবস্থায় নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দেখাতে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীর বাইরে দলের নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেয় আওয়ামী লীগ। যেসব আসনে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকার প্রার্থীদের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীর।

নওগাঁ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল ইসলাম মারা যাওয়ার পর ওই আসনের নির্বাচন স্থগিত করে ইসি। ২৯৯ আসনে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ২৪টি।

এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৮৯ হাজার ২৮৯ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৯ হাজার ৭৪১ ও নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৮ হাজার ৬৯৯। এ ছাড়া, সারাদেশে এবার তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৮৪৯ জন।

এবারই প্রথমবারের মতো ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছে। শুধু দুর্গম অঞ্চলের ২ হাজার ৯৬৪টি কেন্দ্রে ব্যালট পাঠানো হয় ভোটের আগের দিন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আছেন স্থানীয় ২০ হাজার ৭৭৩ জন পর্যবেক্ষক। এ ছাড়া, প্রায় দুই শতাধিক বিদেশি পর্যবেক্ষক থাকছেন বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে।

নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনের সহযোগী হিসেবে গত ৩ জানুয়ারি থেকে দেশের ৬২ জেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা ও বরগুনা এবং ১৯ উপজেলায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে বলে জানানো হয়।

গতকাল সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ভোটারদের আনন্দমুখর পরিবেশে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানান সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল।

তবে নির্বাচনের আগে দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতা ও সহিংসতার ঘটনায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

এর আগে, গত ১৫ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন সিইসি।

তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩০ নভেম্বর, যাচাই-বাছাই ১-৪ ডিসেম্বর, আপিল ও শুনানি ৬-১৫ ডিসেম্বর।

১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার সময়য় ছিল। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয় ১৮ ডিসেম্বর। ১৮ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয় এবং শেষ হয় গত শুক্রবার সকাল ৮টায়।

Comments

The Daily Star  | English
Election in Bangladesh

Why are we trying to make the election uncertain?

Those who are working to prevent the election should question themselves as to how the people will be empowered without one.

16h ago