বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনে উপনির্বাচন

ইসিতে আপিল করে ব্যর্থ হলে হাইকোর্টে যাব: হিরো আলম

বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের মনোনয়ন ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনে আপিল করে যদি ব্যর্থ হন, তাহলে হাইকোর্টে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম।
আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আইন শাখায় প্রার্থিতা ফিরে পেতে আবেদন জমা দেন হিরো আলম। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের মনোনয়ন ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনে আপিল করে যদি ব্যর্থ হন, তাহলে হাইকোর্টে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম।

পাশাপাশি দুটি আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেলে উভয় আসনেই নির্বাচন করবেন বলে জানান তিনি। সুষ্ঠু ভোট হলে তিনি শতভাগ জয়লাভ করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আইন শাখায় প্রার্থিতা ফিরে পেতে আবেদন জমা দেন হিরো আলম।

গত রোববার ন্যূনতম ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরসহ সমর্থনসূচক তালিকায় গরমিল থাকায় বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচনে আলোচিত হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

হিরো আলম বলেন, 'কাগজপত্র সব আমি এখানে জমা দিয়েছি। এখন যাচাই-বাছাইয়ে বুঝতে পারব, তারা সুষ্ঠু বিচার করল, না অবিচার করল। এখান থেকে বাতিল করলে আমি আবার হাইকোর্টে যাব। ২ আসন থেকে প্রার্থিতা ফিরে পেলে দুটি আসন থেকেই ভোট করব।'

'আমি পরিপূর্ণভাবেই কাগজপত্র জমা দিয়েছি' দাবি করে তিনি বলেন, 'একই ভুলের কারণে ২০১৮ সালে আমার ভোট বাতিল করেছিল। আপনারা সবাই জানেন। আমি আপিল করি। আপিল করার পর না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করি। এবার তো এই ভুল করার কথা না। তারা যে কথা বলেছেন, একটা ভুল দেখা গেছে। একজন ভোটারের নাকি নম্বর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমি নাকি জমাই দেইনি। আমরা নম্বর পেয়েছি, সেটা জমা দিয়েছি।'

হাইকোর্ট থেকে মনোনয়ন ফিরে পেয়ে গতবারের সংসদ নির্বাচনের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন, 'তখন প্রথমবার আমি এমপি ইলেকশন করি। তখন অভিজ্ঞতা একটু কম ছিল। বুঝিনি এত ঝামেলা হবে। আমি এর আগে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করছি, এতকিছু তখন ছিল না।'

'সেবার আমি হাল ছাড়িনি' জানিয়ে তিনি বলেন, 'হাইকোর্টে রিট করলাম মনোনয়ন ফিরে পেলাম। সেই নির্বাচনে ভোটের দিন আমার সঙ্গে মারামারি হয়। পরে দুপুরে আমি ভোট বর্জন করি।'

সব পরিপূর্ণ থাকার পরও কেন এমন ঝামেলা হচ্ছে জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন, 'এটা শুধু আমার না। দুটি আসনে সর্বমোট ১১ জনের প্রার্থিতা বাতিল করেছে। সবারই একই ভুল। আমার নামে কোনো মামলা বলেন, ঋণখেলাপি বলেন, কোনো কিছু নেই। অনেকের আরও অনেক সমস্যা থাকে, কিন্তু একটা দোষও তারা আমার বিরুদ্ধে খুঁজে বের করতে পারেনি।'

বগুড়া পুলিশের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে, এমন দাবি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকাই সিনেমার আলোচিত এই অভিনেতা বলেন, 'আইন সবার জন্য সমান, আমি হিরো আলম বলে তো তারা আমাকে বাইরে রাখবে না। আমার সম্মান নষ্ট করার জন্য কিছু লোক অপপ্রচার চালাচ্ছে।'

'দুটি আসনে মনোনয়ন জমা দেওয়ায় পর দুটিই বাতিল হয়েছে কেন' এমন প্রশ্ন তুলে হিরো আলম বলেন, 'এর তো কোনো কারণ থাকতে পারে। সামনে নির্বাচন, এই মুহূর্তে আমরা বলব না ষড়যন্ত্র কারা করছে। আগে ভোটের মাঠে যাব। ফলাফল দেখব। তারপর আপনারাই দেখতে পারবেন কারা ষড়যন্ত্র করে।'

দুটি আসনে মনোনয়ন কেনার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'দুটি কেনার কারণ হলো- বগুড়া-৪ থেকে মনোনয়ন কিনেছিলাম প্রথমে। তারপর আমি যখন দেখলাম, তারা (বগুড়া সদর) পছন্দের প্রার্থী পাচ্ছিল না। তখন এলাকাবাসী বলল, আমাদের সবার দাবি তুমি এবার বগুড়া সদর থেকে নির্বাচন করবা। আর আমার বাসা বগুড়া সদরে। সবাই চাইতেছে। আর আগে কাহালু-নন্দীগ্রাম থেকে যেহেতু আমি নির্বাচন করেছি। এজন্য সবার মন রক্ষা করার জন্য, ভালোবাসা রক্ষা করার জন্য আমি দুটি আসন থেকে নির্বাচন করছি।'

ইউনিয়ন পরিষদে জয় না পেয়েও সংসদ নির্বাচন করছেন জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন, 'অবশ্যই আমি আশাবাদী। যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়,  একশত পার্সেন্ট আমি বলে দিতে পারি যে জয়লাভ করব।'

'গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি' দাবি করে তিনি বলেন, 'ভোটের দিন আমার সঙ্গে মারামারি হয়েছিল। তারপর ভোট আমরা বর্জন করেছি।'

'প্রতিটি লোকের নির্বাচন করার অধিকার আছে' জানিয়ে হিরো আলম বলেন, 'যেহেতু আমি আগেও নির্বাচন করেছি, এবারও টার্গেট আছে। কথায় আছে- একবার না পাড়িলে দেখ শতবার। যেহেতু জীবন যুদ্ধে নেমেছি, শেষপর্যন্ত কতদূর লড়তে পারি দেখব।'

হিরো আলমের কোটি টাকার সম্পদ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'কিছু কিছু লোক আছে তিলকে তাল করে। লিখতে তো আর সমস্যা হয় না।'

'উকিল ৫ লাখ টাকার জায়গায় ৫৫ লাখ লিখেছে' দাবি করে হিরো আলম বলেন, 'উকিলকে বললাম হবে তো ৫ লাখ টাকা।'

Comments