হিরো আলমের অভিযোগের ভিত্তি নেই: ইসি

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

বিএনপির ছেড়ে দেওয়া বগুড়া-৬ (সদর) ও বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) সংসদীয় আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন ভবনে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

হিরো আলম নির্দিষ্ট করে কয়েকটি কেন্দ্রে কথা উল্লেখ করেছেন—সে প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাশেদা সুলতানা বলেন, 'এর কোনো ভিত্তি নেই। পত্রিকায় আসার পরেই আমরা...এটা বলতে দ্বিধা নেই, সকাল থেকে এটা আমলে নিয়ে আমরা রেকি করার চেষ্টা করছি। করে ফেলেছি বলা যায়। বগুড়া জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলা, জেলা-উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, থানা নির্বাহী অফিসারের (টিএনও) সঙ্গে স্যার (প্রধান নির্বাচন কমিশনার) নিজে কথা বলেছেন। তারা আমাদের নিশ্চিত করেছেন, এ ধরনের কোনো ইয়ে তাদের কাছে নেই। তাদের রেজাল্ট একদম হান্ড্রেড পারসেন্ট ওকে। এখানে কোনো রকম ইয়ে নেই।'

কমিশন আর কোনো তদন্তে যাবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'না, আমরা স্যাটিসফায়েড। আমাদের কাছে যে রেজাল্ট শিটগুলো এসেছে, সেগুলো আমরা নিজেরাও ক্যালকুলেট করে দেখলাম আসলে কোথাও কোনো ব্যত্যয় নেই। উনি যে কথাগুলো বলেছেন...একজন প্রার্থী যখন হেরে যায় তখন কিন্তু নানা ধরনের প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রবণতা আমাদের দেশে আছে। এটা শুধু হিরো আলম সাহেব না, আমরা যতগুলো নির্বাচন করলাম, সব জায়গায় এ ধরনের প্রবণতা আমরা লক্ষ করেছি।'

কিছু কেন্দ্রে তার এজেন্টদের ফলাফল দেওয়া হয়নি এমন অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, তিনি নন্দীগ্রামে খুব একটা এজেন্ট দেননি। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আমার যেটা কথা হয়েছে; তিনি বলেছেন, আমি এবং এসপি সাহেব নিজে কেন্দ্র ভিজিট করেছি, বেশ অনেকগুলো। আমরা সেখানে গিয়ে তার কোনো এজেন্ট পাইনি। কাহালুতে উনার কিছু এজেন্ট ছিল। যেহেতু কাহালু উনার নিজের এলাকা। উনার বাড়ি ওখানে। নন্দীগ্রামে উনার বাড়ি না।'

'অন্যান্য প্রার্থীর এজেন্ট নেই, রেজাল্ট দেওয়া হয়নি এ ধরনের কোনো অভিযোগ নেই। যেহেতু উনি হেরে গেছেন উনি কিন্তু এই অভিযোগগুলো করছেন। টিভিতে আমি দেখেছি, উনি বলেছেন ভোট ভালো হয়েছে এবং একটা সাক্ষাৎকারে আমি দেখলাম, সাংবাদিক প্রশ্ন করেছেন, আপনি যদি হেরে যান তাহলে কীভাবে নেবেন? উনি বলেছেন, হেরে গেলে আমি ফলাফল মেনে নেব। উনি হেরে গেছেন, উনার কষ্ট হয়েছে, উনি কষ্টের নানাভাবে প্রকাশ করছেন। এটা তো উনি করতেই পারেন। একজন মানুষ বললেই তো আর হয়ে যায় না, প্রমাণ তো থাকতে হবে!' বলেন এই নির্বাচন কর্মকর্তা।

রাশেদা সুলতানা বলেন, 'নির্বাচনী আচরণবিধি যে খুব বেশি ভঙ্গ হয়েছে তেমন তথ্য আমাদের কাছে খুব বেশি আসেনি। যতটুকু এসেছে আমরা সঙ্গে সঙ্গে নোটিশ করেছি। বিশেষত আমি নিজে ডিসি-এসপির সঙ্গে কথা বলেছি, যে এই জায়গায় অল্প হলেও এসেছে, আপনারা দৃষ্টি দিন। কোনো প্রার্থী লিখিত অভিযোগ কমিশনের কাছে দেওয়া এ রকম কিন্তু নেই। নির্বাচন পূর্ববর্তী প্রস্তুতি সন্তোষজনক ছিল বলে আমি মনে করেছি। ভোটের দিনে যে ব্যাপক অনিয়ম—ব্যাপক কী! কোনো অনিয়মই হয়নি, আমার দৃষ্টিতে মনে হয়েছে, বিশেষ করে নর্থ বেঙ্গলে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ে সংবাদপত্রে যেটুকু এসেছে ওটুকুই। তাছাড়া নর্থ বেঙ্গলে খুব বড় ধরনের কারচুপি, ভেতরে ভোট ডাকাতি, এর ভোট ও দিচ্ছে বা ইভিএম নিয়েও কোনো জটিলতা হওয়া সে ধরনের কোনো কিছু আমাদের কাছে নেই। আমার মনে হয়েছে, পুরোপুরি ভোটটা সন্তোষজনক হয়েছে। পত্রিকায় দেখছি, হিরো আলম সাহেব, তার একটু আপত্তি বা উনি অসন্তুষ্ট হয়েছেন।'

Comments