সিলেট সিটি নির্বাচন

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বাসার সামনে অস্ত্র নিয়ে মহড়া, গ্রেপ্তার ৩

সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মহড়ায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের শনাক্ত করে প্রথমে ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী...
ছবি: সংগৃহীত

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর পদপ্রার্থীকে ভয় দেখানোর অভিযোগে তার বাসার সামনে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় এ পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতির নেতৃত্বে অস্ত্রের মহড়া দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে।

আজ শনিবার সকালে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) সুদীপ দাস দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, 'আজ সকাল পর্যন্ত জড়িত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরা হলেন—সিলেট নগরীর বনকলাপাড়ার বাসিন্দা আতিকুর রহমান (৪২), একই এলাকার বাসিন্দা জুবের আহমদ (৩৮) ও হাজীপাড়া নুরুজ্জামান (৩৪)। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মহড়ায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের শনাক্ত করে প্রথমে ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আরও একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।'

'তবে মহড়ায় যে অস্ত্র প্রদর্শন করা হয়েছে তা এখনো উদ্ধার করা যায়নি। অস্ত্র উদ্ধার ও অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে,' বলেন তিনি।

৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সায়ীদ মো. আব্দুল্লাহ গত শুক্রবার সিসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তাতে তিনি বলেন, অস্ত্রের মহড়া দিয়ে তাকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে।

বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সায়ীদ মো. আব্দুল্লাহর অভিযোগটি নির্বাচন কমিশন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে পাঠায় এবং শুক্রবারই তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়, জানিয়েছেন সুদীপ দাস।

অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, গত বুধবার সকাল সোয়া ৬টার দিকে এই ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আফতাব হোসেন খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২টি মোটরসাইকেল নিয়ে ২০ থেকে ২৫ জন সন্ত্রাসী তার বাসার ফটকের সামনে আসেন। সন্ত্রাসীরা অস্ত্র তাক করে তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা ও বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন।

লিখিত অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, আফতাব ও তার অনুসারীরা নির্বাচনের দিন কেন্দ্র দখল করে রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ ভোটকেন্দ্রে গেলে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন। এছাড়া, তার নির্বাচনী পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা ও মাইকিংয়ে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন সায়ীদ মো. আব্দুল্লাহ।

অস্ত্র নিয়ে আফতাব হোসেন খান ও তার অনুসারীদের সায়ীদ মো. আব্দুল্লাহর বাসার সামনে মহড়া দেওয়ার সিসিটিভি ফুটেজ বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

সেখানে দেখা যায়, আফতাব হোসেন খানের নেতৃত্বে কয়েকটি মোটরসাইকেল সায়ীদ মো. আব্দুল্লাহ'র বাসার সামনে শোডাউন করছে। একটি মোটরসাইকেলের মাঝের সিটে বসা একজনের হাতে থাকা অস্ত্র বাসার গেইটের দিকে তাক করতেও দেখা যায়।

সায়ীদ মো. আব্দুল্লাহর দাবি, বন্দুকধারী ওই যুবক মো. আবুল কালাম আজাদ ওরফে তুহিন। তিনি ছাত্রলীগের ৭ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সাবেক সভাপতি।

প্রসঙ্গত, তুহিনকে ২০২১ সালের ১২ মার্চ একটি বিদেশি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি, ১টি পাইপগানের ব্যারেল, ১টি অস্ত্রের বাট ও ১টি রামদাসহ গ্রেপ্তার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। সম্প্রতি তিনি জামিনে বের হয়েছেন।

এ ব্যাপারে কথা বলতে আফতাব হোসেন খান ও আবুল কালাম আজাদ তুহিনের ব্যবহৃত ফোনে কল দিলে দুটি নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়।

Comments