সিলেট সিটি নির্বাচন

শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা

সিলেট সিটি নির্বাচন
সিলেট সিটি নির্বাচনে শেষ মুহূর্তের প্রচারণা। ছবি: শেখ নাসির/স্টার

আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠেয় সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচনের শেষদিনের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা।

আজ সোমবার মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে প্রচারণা।

শেষ মুহূর্তে এসে মেয়র প্রার্থীরা একের পর এক জনসভায় অংশ নিয়ে এক সঙ্গে বেশি সংখ্যক ভোটারের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। কাউন্সিলর প্রার্থীরা চেষ্টা করছেন সব ভোটারের কাছে সরাসরি পৌঁছানোর।

ধারণা করা হচ্ছে, ৮ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও জাতীয় পার্টি মনোনীত নজরুল ইসলাম বাবুলের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে।

গত শনিবার মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও স্মার্ট সিটি বিনির্মাণে ২১ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন।

গতকাল অপর প্রার্থী নজরুল ইসলাম ২১ দফা ইশতেহারে পরিকল্পিত আধুনিক নগরীর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ইশতেহার ঘোষণার পর থেকে সভা-সমাবেশে প্রার্থীরা তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতির দিকে ভোটারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন।

নির্বাচনী প্রচারণায় জাতীয় পার্টির প্রার্থীর চেয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর উপস্থিতি বেশি দেখা যাচ্ছে।

জাতীয় পার্টির প্রার্থীর অভিযোগ, বহিরাগতদের শহরে এনে নির্বাচনী পরিবেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী।

সিলেট সিটি নির্বাচন
সিলেট সিটি নির্বাচনে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় প্রার্থীরা চেষ্টা করছেন সব ভোটারের কাছে পৌঁছানোর। ছবি: শেখ নাসির/স্টার

এ ব্যাপারে তিনি গত শনিবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। তার দাবি, সিলেটের মুরারী চাঁদ কলেজ ও সিলেট সরকারি কলেজের হোস্টেল ভোটের সময় বন্ধ রাখতে হবে, যাতে বহিরাগতরা সেখানে অবস্থান করতে না পারে।

আওয়ামী লীগ প্রার্থীর প্রচারণায় যোগ দিতে দেশের অন্য এলাকায় থেকে দলের নেতাকর্মীরা এসে ভিড় করছেন সিলেটে।

এরই অংশ হিসেবে গতকাল সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সিলেটে প্রচারণা শুরু করে।

আনোয়ারুজ্জামানের পক্ষে প্রচারণায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন ও শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সার্বক্ষণিকভাবে দেখা যাচ্ছে।

যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারাও নগরীতে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

যুক্তরাজ্যপ্রবাসী ও আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য শাখার যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামানের পক্ষে প্রচারণা চালাতে যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশ থেকে সিলেটে এসেছেন ক্ষমতাসীন দলটির নেতাকর্মীরা।

জাতীয় পার্টির প্রার্থীর প্রচারণায় দলটির স্থানীয় নেতাদের অনেককেই দেখা গেলেও জাতীয় পর্যায়ের উল্লেখযোগ্য নেতাদের দেখা যায়নি।

অন্যান্য প্রার্থীদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান নির্বাচন বয়কট করেছেন। জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুল আলম কর্মী সংকটে প্রচারে পিছিয়ে পড়ার কথা জানিয়েছেন।

নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শাহ জাহান মিয়া, আব্দুল হানিফ কুটু, মোশতাক আহমদ রউফ মোস্তফা ও বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত ছালাহ উদ্দিন রিমন ছোট পরিসরে নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত আছেন।

আওয়ামী লীগ প্রার্থীর 'বড় জয়'

ইউরোপভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়াইজ জিওভি-এর সহযোগী সংস্থা সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইলেকশন ম্যানুভারিং আর্কিটেকচার সিলেটে 'ভোট জরিপ' করেছে।

জরিপ অনুসারে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থীর চেয়ে অন্তত ১ লাখ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত এপ্রিল থেকে শুরু করে ৫২ দিনের মাঠ জরিপের পর গত রোববার এর ফলাফল প্রকাশ করে সংস্থাটি।

সিলেট সিটি নির্বাচন
সিলেট সিটি নির্বাচনে প্রচারণা। ছবি: শেখ নাসির/স্টার

১৯০ ভোটকেন্দ্রের ১৩২টিই 'গুরুত্বপূর্ণ'

সিসিক নির্বাচনকে সামনে রেখে মোট ১৯০ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৩২ কেন্দ্রকে 'গুরুত্বপূর্ণ' হিসেবে চিহ্নিত করেছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি)।

যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সেসব কেন্দ্রে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনাও করেছে পুলিশ। 'গুরুত্বপূর্ণ' শব্দটি মূলত ঝুঁকিপূর্ণ শব্দটি এড়াতে ব্যবহার করা হচ্ছে।

তালিকা অনুযায়ী নগরীর ৪২ ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮ ওয়ার্ডের সবকটি কেন্দ্র 'গুরুত্বপূর্ণ'। মাত্র একটি ওয়ার্ডের সব কেন্দ্র স্বাভাবিক হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

এসএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) সুদীপ দাস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দূরত্ব, কেন্দ্রে সীমানা প্রাচীর না থাকা ও প্রার্থীদের মধ্যে বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতি—ইত্যাদি বিবেচনায় এ সব কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'এসব গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে অতিরিক্ত পুলিশ থাকবে। সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের ভ্রাম্যমান ইউনিট, ক্রিটিক্যাল রেসপন্স ইউনিট ও আর্মার্ড পার্সোনাল ক্যারিয়ারও থাকবে।'

আগামী ২১ জুন সিসিক নির্বাচনের ১৯০ কেন্দ্রের ১ হাজার ৩৬৪ কক্ষে ইভিএম মেশিনে ভোট হবে। নগরীতে বর্তমানে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫ জন।

সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে ৮ প্রার্থীর পাশাপাশি ৪২টি ওয়ার্ডে ২৭৩ সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী এবং ১৪ সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৮৭ সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Retaliation 'underway' as India hits Pakistan

New Delhi claims hitting 9 'terrorist sites'; Islamabad says civilians hit, claims downing two Indian jets; at least three killed; US, UN sound alarm

1h ago