খালেদা জিয়াকে ছাড়া দেশ চলবে না: ডা. জাফরুল্লাহ

খালেদা জিয়াকে ছাড়া দেশ চলবে না বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। 
ডা. জাফরুল্লাহ
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

খালেদা জিয়াকে ছাড়া দেশ চলবে না বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। 

তিনি বলেন, 'দেশে যদি শান্তি ফিরিয়ে আনতে হয়, সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হয়, মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে হয়, তাহলে খালেদা জিয়াকে আগে জামিন দিতে হবে। খালেদা জিয়াকে ছাড়া দেশ চলবে না।'

আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে 'জনতার অধিকার পার্টি' (পিআরপি) আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

এ সময় খালেদা জিয়ার জামিনের দাবি জানিয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, 'বিনা বিচারে অন্যায়ভাবে খালেদা জিয়াকে আটকে রেখেছেন, যে টাকা চুরি করে নাই। এক অ্যাকাউন্ট থেকে আরেক অ্যাকাউন্টে টাকা রাখার জন্য জেল খাটাতে হয়।'

তিনি বলেন, 'সোজা কথায় বলতে চাই সুশাসন দরকার। জবাবদিহি দরকার। আর এর জন্য দরকার নিরপেক্ষ নির্বাচন। এ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।'

তিনি আরও বলেন, 'আজ দেশের মানুষ কত কষ্টে আছে। লাখ-লাখ ফুটপাতের ব্যবসায়ী কষ্টে আছেন। তাদের নিয়ে কেউ ভাবে না।'

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বলেন, 'বিরোধী দলকে প্রধানমন্ত্রী বললেন চা খেয়ে যান। তারপরই ভোলায় পুলিশের গুলিতে দুজন মারা গেলেন। তার মানে উনার (প্রধানমন্ত্রীর) হাতে ক্ষমতা নাই। ক্ষমতা অন্যদের হাতে। চাবিকাঠি অন্য জায়গায়।'

'পুলিশের যেখানে লাঠিচার্জ করার কথা সেখানে গুলি করছে। তার কারণ হলো কোনো নিয়মের তোয়াক্কা করছে না। গুলি করতে হলে ম্যাজিস্ট্রেটের লিখিত অনুমতি লাগত। এখন তা নেই। আজকে সেই ক্ষমতা এসপির হাতে দিয়ে দেওয়া হয়েছে,' বলেন তিনি।

সরকার প্রধানের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'আপনি সমুদ্র জয় করেছেন, সেখানে এক্সপ্লোর করছেন না। বাপেক্স, পেট্রোবাংলাও পারছে না।'

দেশে বিদ্যুতের সংকটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'নেপালে ও ভারতে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেত। কিন্তু ভারত করিডোরটুকু দেয়নি। তারা নাকি বন্ধুরাষ্ট্র।'

জনশুমারি ও গৃহগণনার সমালোচনা করে জাফরুল্লাহ বলেন, 'আমাকেও জনশুমারিতে ধরে নাই। আমাদের বাড়িতেও লোক যায়নি। কলমের এক খোঁচায় সাড়ে ১৮ কোটি থেকে জনসংখ্যা সাড়ে ১৬ কোটি হয়ে গেল।'

তিনি বলেন, 'আজকে দেশের মানুষ কত কষ্টে আছে। ফুটপাতের লাখ লাখ ব্যবসায়ী কষ্টে আছেন। ম্যাজিস্ট্রেটরা শুধু গরিবের ওপর উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে।'

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'তাদের প্রত্যেকটা অংকে ভুল আছে। মিথ্যাচার আছে। কয়দিন আগে অর্থমন্ত্রী বললেন যে আমরা আইএমএফের কাছে যাব না। কিন্তু পরে ঠিকই হাতে পায়ে ধরলেন।'

এ অনুষ্ঠানে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহামুদুর রহমান মান্না বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, 'সরকারের মন্ত্রীদের বাসায় কোনো লোডশেডিং নেই। এক মুহূর্তের জন্য তারা আরাম ছাড়তে রাজি নয়। তারা কী এমন লাটসাহেব হয়ে গেছেন। যেখানে দেশের মানুষ লোডশেডিংয়ে কষ্ট পাচ্ছে, সেখানে তারা ১-২ ঘণ্টা লোডশেডিং সহ্য করতে পারছেন না।'

'আজকে নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে লাভ নেই, লড়াই করতে হবে। যতগুলো দল পারেন একত্রিত হয়ে এক মঞ্চে না হোক অন্তত যুগপৎ অভিন্ন আন্দোলন করতে হবে,' বলেন তিনি।

আত্মপ্রকাশ হওয়া জনতার অধিকার পার্টির ৭ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন নতুন দলটির চেয়ারম্যান মো. তরিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, 'জনতার অধিকার পার্টি জাতির সঙ্গে বেইমানি করবে না। দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাবে।'

Comments