আওয়ামী লীগের প্রতি বরাবরই দুর্বলতা আছে পুলিশের: ভূমিমন্ত্রী

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, ‘পুলিশকে সাধারণত যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তার দিক নির্দেশনায় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হয়। কিন্তু বরাবরই আমি দেখেছি, পুলিশের আওয়ামী লীগের প্রতি একটা দুর্বলতা আছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পুলিশের সম্পর্ক থাকলেও, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের শেল্টার দেওয়া কিংবা সহযোগিতা করার মানসিকতা ছিল বলে আমি দেখেছি।’
ছবি: সংগৃহীত

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, 'পুলিশকে সাধারণত যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তার দিক নির্দেশনায় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হয়। কিন্তু বরাবরই আমি দেখেছি, পুলিশের আওয়ামী লীগের প্রতি একটা দুর্বলতা আছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পুলিশের সম্পর্ক থাকলেও, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের শেল্টার দেওয়া কিংবা সহযোগিতা করার মানসিকতা ছিল বলে আমি দেখেছি।'

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার সকালে চট্টগ্রাম নগরীর দামপাড়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

অতীতের স্মৃতিচারণ করে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, '৭৫ এর পরে চট্টগ্রামের অনেক গুরুত্বপুর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হতো আমাদের বাড়িতে। ঢাকা থেকে বড় বড় নেতাকর্মীরা সেসময় আমার বাবার সঙ্গে আলোচনা করতে আসতেন। আমরা ছিলাম মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি। আমার বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, কোতোয়ালী থানায় রাখা হয়েছিল। পুলিশ প্রশাসন যদি কঠিন হতো কিংবা আরও এগ্রেসিভ হতো, আওয়ামী লীগের প্রতি চরমভাবে আঘাত হানতো, তাহলে আওয়ামী লীগের টিকে থাকা কঠিন হয়ে যেত। হয়তো টিকে থাকতাম আমরা, কিন্তু অনেক কষ্ট হতো।'

তিনি আরও বলেন, 'দু:সময়ে আপনারা প্রমাণ করেছেন। অনেক পুলিশ অফিসার হয়তো ছিলেন, অনেকে অবসরে গেছেন ওই আমলে, উপর থেকে নিচে। কিন্তু আমরা সবসময় খেয়াল করেছি আওয়ামী লীগের প্রতি পুলিশের একটি দুর্বলতা সবসময় ছিল। পুলিশ আমাদের অনেকভাবে সহায়তা করেছে।'

মন্ত্রী বলেন, 'আমাদের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা কিন্তু অকৃতজ্ঞ নন। তিনি কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর পুলিশ প্রশাসনের প্রতি নজর দিয়েছেন। আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে পুলিশ বাহিনী অনেক পিছিয়ে ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সরকার পুলিশ বাহিনী, এমনকি তাদের পরিবার, তাদের বেতন কাঠামো, অনান্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে দিয়েছে।'

'এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর পুলিশ বাহিনীকে যে লেভেলে নিয়ে গেছে, তাতে আপনাদের আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না। এমনকি আপনাদের পুলিশের আইজি মহোদয়কে থ্রি স্টার পদমর্যাদার র‌্যাঙ্ক দিয়েছেন। এই সরকার আপনাদের দেখাশোনা করা ছাড়াও পুলিশকে এমনকি ব্যাংকও দিয়েছে। আমি মনে করি বিগত যতগুলো সরকার ছিল, তার মধ্যে আমাদের সরকার সবচেয়ে বেশি পুলিশ বাহিনীকে সহায়তা করেছে', যোগ করেন তিনি।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, 'একটি দেশে পুলিশ বাহিনী দেশের নিরাপত্তা নিয়ে সব থেকে বেশি কাজ করে। দেশের আইনশৃংঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করছে। র‍্যাব এলিট ফোর্স পুলিশকে ওয়েল ইকুইপড করা হয়েছে, হেলিকপ্টার দেওয়া হয়েছে, বিদেশে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে, তাদের মাইন্ডসেট চেঞ্জ হয়েছে।'

'বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান, দেশের অর্থনৈতিক চেঞ্জ স্বাধীনতা বিরোধীরা মেনে নেয়নি, নেবেও না। আমাদের রিজার্ভ, আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থান এখন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক শক্তিশালী এবং সাসটেইনেবল। অনেক প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। কিন্তু আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, তাদের স্বপ্ন পূরণ হবে না। তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন', বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরিন আখতার, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিটের কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার এ কে এম সরোয়ার কামাল, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) এম এ মাসুদ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) আ স ম মাহতাব উদ্দিনসহ পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Comments