বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গাড়ির কারখানা দেখতে যুক্তরাষ্ট্র যাবেন সিসিক মেয়র

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কেনা ২০টি গাড়ির উৎপাদনকারী ফ্যাক্টরি পরিদর্শন ও গাড়িগুলোর কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে যুক্তরাষ্ট্র যেতে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কেনা ২০টি গাড়ির উৎপাদনকারী ফ্যাক্টরি পরিদর্শন ও গাড়িগুলোর কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে যুক্তরাষ্ট্র যেতে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

গত ৩০ আগস্ট স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক সরকারি আদেশে উল্লেখ করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে ক্যাটারপিলার ইনকের ফ্যাক্টরিতে ৪ দিনের এ সফরের খরচ বহন করবে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাংলা ট্র্যাক লিমিটেড।

যদিও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এ সফরের খরচ বহন করবে বলে উল্লেখ রয়েছে, তবে, এ খরচের টাকা মূলত গাড়িগুলোর কেনা দামের সঙ্গেই অন্তর্ভুক্ত থাকে। ফলে পরোক্ষভাবে জনগণের টাকায় এ সফর হচ্ছে উল্লেখ করে সেটির সমালোচনা করছেন বিশিষ্টজনেরা।

এ সফরে মেয়র আরিফুল হক ছাড়াও সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী শামসুল ইসলাম, সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) জয়দেব বিশ্বাস, উপ-সহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) জাবেরুল ইসলাম, কনজারভেনসি অফিসার হানিফুর রহমান ও মন্ত্রণালয়ের ১ জন যুগ্ম সচিব যাওয়ার কথা থাকলেও তাদের সরকারি আদেশ এখনো হয়নি।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, 'এ ধরনের সরকারি কেনাকাটায় যখন বিদেশ সফর অন্তর্ভুক্ত থাকে, তখন কোম্পানি এ টাকা দামের সঙ্গেই ধরে রাখে। তাই আপাতত এ ধরনের সফরের খরচ কোম্পানির মনে হলেও তা মূলত জনগণের করের টাকা, যা কেনাকাটায় অতিরিক্ত দাম হিসেবে দেওয়া হয়েছে।'

'এ সফরে প্রকৌশলীদের যাওয়ার বিষয়টি যদিও যুক্তিসঙ্গত, কিন্তু নন-টেকনিক্যাল ব্যক্তি মেয়র বা মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিবের যাওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়', বলেন তিনি।

সফরটির প্রাথমিক সময় গত ২৭ থেকে ৩০ আগস্ট হওয়ার কথা থাকলেও মেয়রের সরকারি অনুমোদন ৩০ আগস্ট পাওয়ায় এবং বাকিদের অনুমোদন এখনো না হওয়ায় সময় পুনরায় নির্ধারণ করা হতে পারে বলে জানিয়েছে সিসিকের একজন কর্মকর্তা।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নের একটি প্রকল্পের অধীনে বাংলা ট্র্যাক লিমিটেড থেকে ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্যাটারপিলার ব্রান্ডের ১৫টি কমপেক্টর ট্রাক, ২টি হুইল এক্সকেভেটর, ২টি বুলডোজার ও ১টি রেকার কিনেছে সিসিক।

সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, 'এ ধরনের কেনাকাটায় সংশ্লিষ্টদের বিদেশ সফরের বিষয়ে শর্ত থাকে। তাই মেয়রের নেতৃত্বে ৪ জন প্রকৌশলী, ১ জন কনজারভেনসি কর্মকর্তা ও মন্ত্রণালয়ের ১ জন প্রতিনিধির যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা রয়েছে।'

'ক্রয় সংশ্লিষ্টরা সরবরাহ করা পণ্যের মান যাচাই করতে পারেন। এ ছাড়াও, বাংলা ট্র্যাক লিমিটেড ২ বছর এসব গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ ও অপারেশনের দায়িত্বে থাকার পর যখন সিসিকের কাছে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ আসবে, তখন যে দক্ষতা প্রয়োজন, তা প্রকৌশলীরা এই সফর থেকে শিখতে পারবেন, যা মূলত দেশের কাজে লাগবে', যোগ করেন তিনি।

এ বিষয়ে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি টেকনিক্যাল বিষয় না বুঝলেও এসব আধুনিক গাড়ির কার্যক্রম সম্পর্কে বুঝতে পারব। যেহেতু পরিচ্ছন্নতা কাজে নিয়োজিতদের সঙ্গে আমি দিনরাত থাকি, এসব যন্ত্রের কার্যক্রম জানা থাকা উপকারী হবে।'

'তা ছাড়া এ সফরের খরচ জনগণের টাকায় নয়, বরং সব খরচ বহন করবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি', বলেন তিনি।

তবে বাংলা ট্র্যাক লিমিটেডের হেড অব গ্রুপ ব্রান্ড ম্যানেজমেন্ট তৌসিফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ ধরনের সফরের খরচ সাধারণত দামের মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত থাকে। আমরা শর্ত অনুযায়ী সিসিককে ফ্যাক্টরি পরিদর্শনের আমন্ত্রণপত্র দিয়েছি। এখন কে কে যাবেন, বিষয়টি তাদের সিদ্ধান্ত। তা ছাড়া সফরের নির্ধারিত সময়ও ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় সফর অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে গেছে।'

Comments