বিদ্যুৎ সংকট, সিইটিপির সীমিত ধারণক্ষমতায় ট্যানারির উৎপাদন কমেছে ৪০ শতাংশ

বিদ্যুৎ সংকট, সিইটিপির সীমিত ধারণক্ষমতায় ট্যানারির উৎপাদন কমেছে ৪০ শতাংশ
সাভারের হরিনধারা এলাকায় কাঁচা চামড়ার আড়ত। ছবি: স্টার

বিদ্যুৎ সংকট ও কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের (সিইটিপি) অক্ষমতার কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন সাভারের বিসিক চামড়া শিল্পনগরীর ট্যানারি মালিক ও চামড়া ব্যবসায়ীরা।

আজ শনিবার সকালে সাভারের হরিনধারা এলাকায় কাঁচা চামড়ার আড়তে সরেজমিনে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী ও ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানা যায়।  

মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, ট্যানারি মালিকরা গত বছরের তুলনায় এখন চামড়ার দাম অনেক কম দিচ্ছেন। এ কারণে বিপুল অংকের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। এমনকি দাম কমিয়েও কোরবানী মৌসুমের অনেক চামড়া এখনো বিক্রি করতে পারেননি তারা। 

অপরদিকে ট্যানারি মালিকরা বলছেন, বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও সিইটিপির সীমিত ধারণক্ষমতার কারণে রেশনিং পদ্ধতিতে ট্যানারি পরিচালনার করায় ট্যানারিগুলোতে অনেক চামড়া পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। কারখানাগুলোর উৎপাদন ৪০ শতাংশ কমে গেছে। এ কারণে মোটা অংকের লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। 

টাঙ্গাইলের ব্যবসায়ী মো. মিলন মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গুনগত মান বিবেচনায় কাচা চামড়া বর্তমানে ২০ থেকে ৩৫ টাকা স্কয়ার ফিট বিক্রি করতে হচ্ছে, যা গত বছরের তুলনায় অনেক কম। কোরবানি মৌসুমের চামড়া বাকিতে বিক্রি করতে হয়েছে। বাকির টাকাও ট্যানারি মালিক বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে দিচ্ছেন না।'

'সরকার ৪৫ টাকা প্রতি স্কয়ার ফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করায় এবছর লাভের আশায় চামড়া কিনেছিলাম কিন্তু এখন মোটা অংকের লোকসান গুনতে হচ্ছে। ঋণের টাকা পরিশোধ করবো কীভাবে এটা ভেবে খুবই দুশ্চিন্তিত হয়ে পড়েছি,' বলেন তিনি।

একই কথা বলেছেন জামালপুরের চামড়া ব্যবসায়ী মুখলাল রবিদাস।  তিনি বলেন, 'আমি দুটি ট্যানারিতে ৩০০ চামড়া বিক্রি করেছি। বাকিতে চামড়া দিয়েছিলাম। তারা এখন টাকা দিচ্ছেন না। গত এক মাস ধরে ঘুরতে হচ্ছে। যে চামড়াগুলো নগদ বিক্রি করেছি সেগুলো অনেক কম দামে বিক্রি করতে হয়েছে।'

হরিনধারা এলাকার আড়ৎ নাইচ লেদারের মালিক সৈয়দ বাশার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মৌসুমি ব্যবসায়ীরা এবছরও ক্ষতির মুখে পড়েছেন।  ঈদের আগে যে দাম ছিল তার চেয়ে এখন চামড়ার দাম অনেক কম। ছাগলের চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়, মহিষের চামড়া ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা,  মানভেদে গরুর চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে ২০ থেকে ৩৫ টাকা।' 

জানতে চাইলে বাংলাদেশে ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সিইটিপির ধারনক্ষমতা ২৫হাজার কিউবিক মিটার হওয়ায় বেশ কয়েকদিন ট্যানারি রেশনিং পদ্ধতিতে (সপ্তাহে ৩দিন) চালাতে হয়েছে। তবে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ছোট ট্যানারিগুলোতে রেশনিং সিস্টেম উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু বড় বড় ২৬টি ট্যানারিকে একটি নিয়মে মধ্যে দিয়ে পরিচালনা করতে হচ্ছে। যেমন যাদের কাঁচা চামড়া প্রসেসের ৩টি ড্রাম রয়েছে তাদের ২টি চালাতে হচ্ছে। তারপরও উৎপাদন ৪০ শতাংশ নেমে গিয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা ট্যানারি পরিচালনা ঠিকমতো করতে পারছিনা প্রতিদিন গড়ে ৩/৪ ঘণ্টা বিদুৎ থাকেনা। অনেক চামড়া পচে ট্যানারিতেই নষ্ট হয়ে গেছে। চামড়া প্রসেস না করতে পারলে ট্যানারিগুলো চামড়া কিনে কী করবে? এক কথায় বলা যায় আমরা এই সেক্টরের সঙ্গে যারা যারা জড়িত সবাই লোকসানের মুখে পড়েছে।'

 

Comments

The Daily Star  | English

'Most of them had lost parts of their skulls'

167 admitted to National Institute of Neurosciences & Hospital during July uprising, doctor tells ICT-1

1h ago