সরকারি নির্দেশ অমান্য করে পশুরহাটে ৩ গুণ খাজনা আদায়
পশুর হাটে খাজনা আদায় করতে জেলা প্রশাসকের সংশোধনী নির্দেশ মানছেন না লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার পাটগ্রাম পৌরসভার মেয়র। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও তা নেওয়া হচ্ছে না। অতিরিক্ত খাজনা আদায়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক।
জেলার সব পশুরহাটে গরু ও মহিষ প্রতি ৩৫০ টাকা খাজনা আদায় করা হলেও, পাটগ্রাম উপজেলার রসুলগঞ্জ হাটে নেওয়া হচ্ছে ১ হাজার টাকা। অন্যান্য হাটে প্রতিটি ছাগল ও ভেড়ার জন্য ৬০ টাকা খাজনা দিতে হলেও রসুলগঞ্জ হাটে দিতে হচ্ছে ৩০০ টাকা।
খাজনা নিয়ে প্রায়শই ইজারাদারের প্রতিনিধির সঙ্গে কৃষকদের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
এ বছর রসুলগঞ্জ হাটের বাৎসরিক ইজারা চুক্তি হয়েছে ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকায়। গত বছর এই হাটের ইজারা হয়েছিল ২ কোটি ৭৭ লাখ ৫ হাজার টাকায়।
রসুলগঞ্জ হাটটি জেলার সবচেয়ে বড় পশুর হাট। পাটগ্রাম উপজেলার জোংড়া গ্রাম থেকে হাটে আসা কৃষক মেছের আলী (৫৮) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত বছরের চেয়ে ৩ গুণ বেশি খাজনা আদায় করছেন ইজারাদার। আর কোনো হাটে এতবেশি খাজনা নেওয়া হয় না।'
রসুলগঞ্জ হাটে পশু কেনা-বেচার সঙ্গে জড়িত মোখলেছ আলী বলেন, 'প্রতি সপ্তাহে রোববার ও বৃহস্পতিবার হাট বসে এখানে। প্রতি হাটে ২ হাজারের বেশি গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া বেচাকেনা হয়।'
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পাটগ্রাম পৌরসভার মেয়রের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক রসুলগঞ্জ হাটে পশু কেনাবেচায় খাজনা বৃদ্ধি করে নির্দেশনা দেন গত ২ ফেব্রুয়ারি। বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে সেই নির্দেশনা বাতিল করা হয় ২৮ এপ্রিল। সংশোধিত নির্দেশনায় প্রতিটি গরু-মহিষের জন্য ৬০০ টাকা এবং প্রতিটি ছাগল-ভেড়ার জন্য ১০০ টাকা খাজনা আদায়ের কথা উল্লেখ করা হয়।
রসুলগঞ্জ হাটের ইজারাদার বিশ্বজিত কুমার হিসাবিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খাজনা বৃদ্ধির তালিকা দেখেই ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকায় বাৎসরিক চুক্তিতে রসুলগঞ্জ হাটের ইজারা নিয়েছি।'
তবে, খাজনার পরিমাণ কমিয়ে মেয়রকে দেওয়া জেলা প্রশাসকের নতুন নির্দেশনা সম্পর্কে তিনি জানেন না বলে দাবি করেন।
পাটগ্রাম পৌরসভার মেয়র রাশেদুল ইসলাম সুইট দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খাজনা বৃদ্ধি সংক্রান্ত জেলা প্রশাসকের অনুমোদন পাওয়ার পর ইজারাদার নিয়োগ করা হয়। জেলা প্রশাসক পরবর্তীতে আমাকে সংশোধনী নির্দেশনা দেন। তাকে এ ব্যাপারে জবাবও দিয়েছি। এখন যদি জেলা প্রশাসকের সংশোধনী নির্দেশনা মারতে যাই, তাহলে ইজারাদারের সঙ্গে চুক্তিভঙ্গ হবে। তাই নতুন নির্দেশনা মানা সম্ভব হচ্ছে না।'
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যেহেতু মেয়র সংশোধনী নির্দেশনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিচ্ছেন না, তাই এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে শিগগির।'
Comments