অবৈধ বালু উত্তোলন, বীর উত্তম খালেদ মোশাররফ সেতুর সিসি ব্লকে ধস
জামালপুরের ইসলামপুরে ৫৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের শহীদ মেজর খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম সেতুর সিসি ব্লকের একাংশ ব্রহ্মপুত্র নদীতে ধসে পড়েছে। প্রভাবশালীদের অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ফকিরপাড়া এলাকার শহীদ মেজর খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম সেতুটি ৩টি উপজেলাকে সংযুক্ত করেছে। জামালপুরের ইসলামপুর ও বকশেগঞ্জ এবং শেরপুর জেলা সদরের সংযোগ সেতু এটি। সেতুটির সিসি ব্লক ধসে পড়ায় স্থানীয় কবরস্থান, রাসেল মিনি স্টেডিয়ামসহ বেশ কিছু স্থাপনা ধসে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উপজেলা এলজিইডি সূত্র জানায়, ১০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। ২০১৮ সালে সেতুটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি আইন অমান্য করে কয়েক মাস ধরে অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে নদী থেকে মাটি ও বালু উত্তোলন করে। বালু-মাটি বিক্রি করে প্রভাবশালীরা অনৈতিকভাবে আর্থিক লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদীর পাড়, হুমকির মুখে পড়েছে সড়ক, সেতু, স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।
ফকিরপাড়া গ্রামের হাবিব মিয়া বলেন, 'নদীদস্যুরা প্রভাবশালী। প্রকাশ্যেই তারা নদী থেকে বালু উত্তোলন করলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি গ্রামবাসী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করলেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।'
গয়ালের চরের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বলেন, 'অবৈধ মাটি কাটা বন্ধ করতে কয়েকবার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু, তাদের সিন্ডিকেট এতটাই শক্তিশালী যে, সব প্রতিরোধ ব্যর্থ হয়েছে।'
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান রুমান বলেন, 'বালু উত্তোলন ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ অনুযায়ী কালভার্ট, বাঁধ, ব্যারেজ, সেতু, বাঁধ, মহাসড়ক, রেললাইন, আবাসিক এলাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ।'
তিনি দাবি করেন, 'সেতুটির সিসি ব্লক ধসে পড়ার অন্যতম কারণ পানির প্রবল স্রোত। এজন্য বালু উত্তোলন দায়ী নয়।'
জামালপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সায়েদুজ্জামান সাদেক বলেন, 'বিষয়টি আমরা শুনেছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশাকরি এ ব্যাপারে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
Comments