রুশ দূতাবাসের বিবৃতিতে কোনো গ্রহণযোগ্য যুক্তি নেই: টিআইবি

বেশি দামে রাশিয়া থেকে গম আমদানি ও গ্যাজপ্রমকে দিয়ে ভোলায় তিনটি গ্যাসকূপ খননের চুক্তি নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর বক্তব্যের প্রতিবাদে ঢাকার রুশ দূতাবাস যে বিবৃতি দিয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি বলেছে, রুশ দূতাবাসের বিবৃতিতে কোনো গ্রহণযোগ্য যুক্তি নেই।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ

বেশি দামে রাশিয়া থেকে গম আমদানি ও গ্যাজপ্রমকে দিয়ে ভোলায় তিনটি গ্যাসকূপ খননের চুক্তি নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর বক্তব্যের প্রতিবাদে ঢাকার রুশ দূতাবাস যে বিবৃতি দিয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি বলেছে, রুশ দূতাবাসের বিবৃতিতে কোনো গ্রহণযোগ্য যুক্তি নেই।

আজ বৃহস্পতিবার টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এক বিবৃতিতে বলেছে, 'জি-টু-জি ভিত্তিতে গম আমদানির খরচ উন্মুক্ত টেন্ডারিং পদ্ধতির চেয়ে কম' রুশ দূতাবাসের এই দাবিটি গ্রহণযোগ্য নয় কারণ, জি-টু-জি পদ্ধতির ক্ষেত্রে ও নির্ধারিত দর বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতামূলক দরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি-না, তা নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এই দর বিশ্ববাজারে তুলনামূলক কম ছিল এবং আরও কমার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

টিআইবির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গ্যাস অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে মার্কিন কোম্পানির সঙ্গে তুলনা করার প্রচেষ্টাও প্রাসঙ্গিক নয়। গ্যাজপ্রমকে চুক্তি প্রদানের ব্যয়ের তুলনায় বাপেক্স কর্তৃক গ্যাস অনুসন্ধানের অনুমিত ব্যয় বিবেচনা করে টিআইবি তার সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। এই চুক্তির অধীনে গ্যাজপ্রমের ব্যয় বাপেক্সের চেয়ে তিন গুণ বেশি ছিল কেন সেটা ব্যাখ্যা করলে দূতাবাসের প্রয়াস অর্থবহ হতো।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের গম আমদানি বা গ্যাস অনুসন্ধানসহ কোনো ব্যবসায়িক চুক্তি বা পণ্য সরবরাহকারী কোনো দেশ সম্পর্কে টিআইবির কোনো আপত্তি নেই। দেশের অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার বা ভ্যালু ফর মানি এবং সর্বোপরি এই ধরনের চুক্তিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করা টিআইবির কাছে একমাত্র গুরুত্ব বহন করে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক টিআই-রাশিয়ার ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তোলেন রাশিয়া সরকারের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, রাশিয়ায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিশ্বাসযোগ্য কাজের জন্যই টিআই-রাশিয়াকে 'ক্লেপ্টোক্রেটিক' রুশ সরকারের নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে। এ ছাড়াও আরাও বিভিন্ন সংস্থা রুশ শাসনব্যবস্থার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে এবং নিপীড়িত হতে হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।

টিআইবি বলেছে, 'ন্যাশনাল ইলেকট্রিক এলএলসি রাশিয়ান রপ্তানিকারকের এজেন্ট হিসেবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল না বলে, দূতাবাসের দাবি সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। ওই সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্যে স্পষ্ট হয় যে, তথাকথিত স্থানীয় এজেন্ট চূড়ান্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে চুক্তি সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করেন। টনপ্রতি ১০০ মার্কিন ডলারের ল্যান্ডিং খরচ এবং এই উচ্চ হারে ৫ লাখ টন পণ্যের চুক্তিতে কীভাবে ভ্যালু ফর মানি নিশ্চিত করা হয়েছে- এই বিষয়ে রাশিয়ান দূতাবাসের বিবৃতিতে কোনো গ্রহণযোগ্য যুক্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি।'

টিআইবি আরও বলেছে, পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে রাশিয়ার বৈরিতার ব্যাপারে টিআইবির উদ্বেগকে যুক্ত করতে রুশ দূতাবাসের প্রচেষ্টা পুরোপুরি অযৌক্তিক এবং আত্মঘাতী।

Comments