পলিশ করে বছরে ২০-২২ লাখ টন চাল অপচয় হয়: খাদ্যমন্ত্রী

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, প্রতি ১০০ মেট্রিকটন চাল পলিশ করলে ৫ মেট্রিকটন অপচয় হয়। এভাবে বছরে প্রায় ২০-২২ লাখ টন চাল অপচয় হয়।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের মিলনায়তনে ‘আন্তর্জাতিক নিউট্রিশন অলিম্পিয়াড ২০২২’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। ছবি: স্টার

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, প্রতি ১০০ মেট্রিকটন চাল পলিশ করলে ৫ মেট্রিকটন অপচয় হয়। এভাবে বছরে প্রায় ২০-২২ লাখ টন চাল অপচয় হয়।

খাদ্যমন্ত্রী আজ শনিবার শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের মিলনায়তনে দুই দিনব্যাপী 'আন্তর্জাতিক নিউট্রিশন অলিম্পিয়াড ২০২২' এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, 'চালের যে অংশটি অপচয় হয় তা আটা বা সুজিতে আসে না। অটোমেটিক হাওয়া হয়ে যায়। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী একই চাল চার বার ছেটে চকচকে করে বাজারজাত করেন। ছাটাইয়ের সময় চালের বাইরে দিকের পুষ্টিকর অংশটি অপচয় হয়।'

তিনি আরও বলেন, 'মাঝে মাঝে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে আমাদের চাল আমদানি করতে হয়। চাল পলিশের কারণে চালের দামও বৃদ্ধি পায়। ব্যবসায়ীরা এই ক্ষতি ভোক্তাদের ওপর চাপায়। তারা বহন করে না।'

খাবারের পুষ্টিমান নিয়ে সরকার আইন করতে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে আইন নিয়ে আসছি। তবু আমাদের সবাইকে সচেতন হবে।

মন্ত্রী বলেন, অনেকে আবার সিল্কি পলিশ করা চাল খেতে চায়। এটাতে পাঁচবার ক্রাশিং করতে হবে। এতে আরও একটন করে কমবে। এতে আর কিছুই (পুষ্টি) থাকবে না। তাই আমরা পলিশ করা চাল খাবো না এমন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, খাদ্যমন্ত্রণালয় দেশের সকল নাগরিকের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে কাজ করছে। প্রতিটি জেলায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম চলছে। পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মকে পুষ্টি সচেতন করতে তাদেরকে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে।

সাধান চন্দ্র মজুমদার বলেন, অপুষ্টি রোধে নিউট্রিশন ক্লাবের সদস্যরা বিশেষ করে তরুণেরা কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো শহিদুর রশিদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের প্রফেসর ড. নাজমা শাহীন, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রেশন (গেইন) এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. রুদাবা খন্দকার।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন এফপিএমইউর মহাপরিচালক মো. শহীদুজ্জামান ফারুকী। নিউট্রিশন অলিম্পিয়াড এর উদ্যোক্তা বিবিআইডি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদ উদ্দিন আকবরও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষি উৎপাদন কমছে, জমির পরিমাণ কমছে। কিন্তু মানুষ বাড়ছে। আর এতে খাদ্য ও পুষ্টি হুমকির মুখে পড়ছে। এ অবস্থার পরিবর্তনে কৃষির রূপান্তর প্রয়োজন।

দুদিনের এ নিউট্রিশন অলিম্পিয়াডে শিক্ষার্থীদের জন্য আছে ওয়ার্কিং সেশন, নিউট্রিশন প্রতিযোগিতা, সেমিনার, বিতর্ক, চিত্রাঙ্কন এবং ইনোভেশন ল্যাব কার্যক্রম।

নিউট্রিশন অলিম্পিয়াডে ৩০টি দেশ থেকে প্রতিনিধিরা ভার্চুয়ালি অংশ নেন।

 

Comments