এ বছরই দেশে হুন্দাই গাড়ি অ্যাসেম্বল শুরু: কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত

এ বছরের শেষ নাগাদ দেশে হুন্দাই গাড়ির অ্যাসেম্বল করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কিউন।
কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত
দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কিউন। ছবি: সংগৃহীত

এ বছরের শেষ নাগাদ দেশে হুন্দাই গাড়ির অ্যাসেম্বল করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কিউন।

কোরিয়ার জাতীয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর একটি হোটেলে বক্তব্য দেওয়ার সময় রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কিউন এ কথা জানান।

তিনি বলেন, 'সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য ও অর্থবহ কিছু উন্নয়ন হয়েছে। বাংলাদেশের একটি স্থানীয় কোম্পানির সঙ্গে স্যামসাং ইলেকট্রনিকস নরসিংদীতে অনেক গ্যাজেট তৈরি করছে।'

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, 'কালিয়াকৈর বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে বাংলাদেশি কোম্পানি ফেয়ার টেকনোলজি এখন হুন্দাই মোটরসের জন্য একটি অ্যাসেম্বলি প্ল্যান্ট তৈরি করছে।'

'এ বছরের শেষ নাগাদ এখানেই হুন্দাই গাড়ি অ্যাসেম্বল করা হবে,' যোগ করেন তিনি।

লি জ্যাং-কিউন বলেন, '১৯৭৩ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ৪৯ বছর ধরে প্রতিটি ক্ষেত্রেই কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন যাত্রায় কোরিয়া পাশে দাঁড়িয়েছে। কোরিয়া এজন্য খুবই গর্বিত।'

বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের উত্থানের অন্যতম সাক্ষী দক্ষিণ কোরিয়া ও দেশটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ১৯৭৯ সালে দেশ গার্মেন্টস এবং কোরিয়ান কোম্পানি দাইয়ু করপোরেশনের মধ্যে অংশীদারত্ব বাংলাদেশে গার্মেন্টস শিল্পের সূচনা।

চট্টগ্রামে স্থাপিত কেইপিজেড কোনো নির্দিষ্ট দেশের জন্য প্রথম বেসরকারি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল। 

কোরিয়া বর্তমানে বাংলাদেশে পঞ্চম বৃহত্তম বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং এ বিনিয়োগের ৭০ শতাংশের বেশি পোশাক খাতে।

কোরিয়ার জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কিউন ও বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

লি জ্যাং-কিউন বলেন, 'দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এ বছর সালে ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।'

উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার সহায়তা পাওয়া তৃতীয় বৃহত্তম দেশ বাংলাদেশ।

কোরিয়ান সরকার সম্প্রতি বাংলাদেশের উন্নয়ন খাতের জন্য দেওয়া ঋণের পরিমাণ আগামী ৫ বছরের জন্য ৭০০ মিলিয়ন ডলার থেকে ৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কোরিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্কের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হল এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম (ইপিএস)। এর মাধ্যমে কোরিয়ায় যাওয়া প্রবাসী কর্মীদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। 

প্রতি বছর গড়ে ২ হাজার কর্মী কোরিয়ায় চাকরি নিয়ে যান। ২০১৯-২০ অর্থবছরে কোরিয়া থেকে দেশে ২০৯ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

এ বছর কোরিয়ায় প্রায় ৫ হাজার কর্মী যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, 'নিঃসন্দেহে প্রবাসীকর্মীরা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন।'

অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার জন্য দক্ষিণ কোরিয়াকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কোরিয়ার অব্যাহত সমর্থন কামনা করেন।

Comments