‘আমলারা চান না সাংবাদিকরা সচিবালয়ে প্রবেশ করুক’

সচিবালয়ে সাংবাদিক প্রবেশের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা। তারা বলেছেন, আমলাদের দুর্নীতি খবর যাতে জানাজানি না হয় এরজন্য সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার সীমিত করা হয়েছে। আমলারা চান না সাংবাদিকরা সচিবালয়ে প্রবেশ করুক।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ। ছবি: সাজ্জাদ হোসেন/স্টার

সচিবালয়ে সাংবাদিক প্রবেশে প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নেতারা। তারা বলেছেন, আমলাদের দুর্নীতি খবর যাতে জানাজানি না হয় এরজন্য সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার সীমিত করা হয়েছে। আমলারা চান না সাংবাদিকরা সচিবালয়ে প্রবেশ করুক।

সাংবাদিকদের নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন, সচিবালয়ে প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড সীমিত করার সিদ্ধান্ত বাতিল, সাংবাদিকদের দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারা সংশোধন এবং সরকারি ২৯ প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো ঘোষণা বাতিলের দাবিতে আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে ডিইউজে।

সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা বলেন, সচিবালয়ে সাংবাদিক প্রবেশের জন্য অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড সীমিত করার কারণে সংবাদ সংগ্রহ করতে সমস্যা হচ্ছে। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের তথ্যও সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে, মামলার কারণে সাংবাদিকদের নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন হচ্ছে না। যথাযথ বেতন কাঠামোর অভাবে সাংবাদিকরা কষ্টে জীবনযাপন করছেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ড নেই। অষ্টম ওয়েজবোর্ড সরকার রোহিত ঘোষণা করার পর থেকে সাংবাদিকের বেতন স্কেল নেই। দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি সেক্টর বেতন কাঠামো ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে। অথচ বেতন কাঠামো ঠিক করে দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। এটি বাস্তবায়ন না হওয়ার পেছনে আমলারা জড়িত। যারা সাংবাদিকদের বঞ্চিত করার চেষ্টা করছেন তাদের চিহ্নিত করে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে। সারাদেশে একযোগে আন্দোলন করা হবে।

সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় (বাসস) নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন হলেও দেশের অন্যান্য মিডিয়ায় বাস্তবায়ন হয়নি। আইন মেনে একটি প্রতিষ্ঠান কার্যকর করলেও বাকিরা কেন করছেন না?

তিনি বলেন, সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকারের জন্য এক্রিডিটেশন কার্ড সংক্রান্ত নীতিমালা আছে। এ ব্যাপারে কোনো পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা করে নিতে হবে। কিন্তু কোনো আলোচনা ছাড়াই বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এর ফলে সাংবাদিকদের সংবাদ সংগ্রহে বাধা তৈরি করছে।

ডিইইউজের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন বলেন, আমলারা গোটা সাংবাদিক সমাজকে সরকারের প্রতিপক্ষ বানানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। সাংবাদিকদের সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন করা দরকার। সরকার চাইলে একদিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করতে পারে। কিন্তু সরকারের আশপাশে থাকা একটি আমলাচক্র আমাদের এসব সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার কাজ করছে।

বিএফইউজের মহাসচিব দীপ আজাদ বলেন, পেশাদার সাংবাদিকের স্বার্থের ব্যাপারে কখনই আপোষ করা হবে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারাসহ সাংবাদিককের কাজে সমস্যা তৈরি করে এরকম আইনগুলো বাতিল করতে হবে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ২৯ প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো ঘোষণায় সাংবাদিকের কাজে বাধা তৈরি করা হয়েছে। এর সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যাখ্যা নেই। প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্নীতিগ্রস্ত হলেও তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে মামলাদের আশঙ্কা আছে। এর ফলে আইনের অপপ্রয়োগের সুযোগ আছে।

তিনি বলেন, এক মাসের মধ্যে আমাদের চার দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারকে অনুরোধ করছি। তা না হলে আগামী ২২ নভেম্বরের ঢাকায় প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করা হবে।

সচিবালয় সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, আমলারা চাচ্ছে না সাংবাদিকরা যেন সচিবালয়ে প্রবেশ করে। তারা নানা অজুহাত দেখাচ্ছেন।

সমাবেশে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

Comments

The Daily Star  | English

Police see dead man running

Prisoners, migrants, even the deceased get implicated in cases

10h ago