রংপুরগামী বাস বন্ধে দুর্ভোগে বগুড়া-গাইবান্ধার যাত্রীরা

বগুড়া ও গাইবান্ধা থেকে আজ শুক্রবার ভোর থেকে রংপুরের উদ্দেশে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এই দুই জেলার হাজারো মানুষ। 
আজ সকাল থেকে বগুড়া বাস টার্মিনাল থেকে রংপুরগামী কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

বগুড়া ও গাইবান্ধা থেকে আজ শুক্রবার ভোর থেকে রংপুরের উদ্দেশে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এই দুই জেলার হাজারো মানুষ। 

বিশেষ করে গাইবান্ধা থেকে প্রতিদিন শত শত মানুষকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হয় চিকিৎসাসেবা নিতে।

রংপুরে আগামীকাল শনিবার বিএনপির বিভাগীয় সম্মেলন। এর আগেই রংপুরের পরিবহন মালিক সমিতি ৩৬ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।

গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম (৪০) হৃদরোগে আক্রান্ত। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার উদ্দেশে আজ সকাল ৯টায় তিনি বাস টার্মিনালে যান। গিয়ে দেখলেন বাস বন্ধ।

রফিকুল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি  হার্টের রোগী। আজ আমার রংপুরে ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল। কিন্তু যেতে পারছি না। টার্মিনালে এসে দেখি বাস বন্ধ। আমি এখন কী করব?'

গাইবান্ধার আমিন খাতুনও (৪৫) সকালে বাস টার্মিনালে গেলেও রংপুর যেতে পারেননি।

রংপুরগামী বাস চলাচল না করায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে অনেক যাত্রীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ছবি: সংগৃহীত

আমিনা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার মেয়ের সিজার হয়েছে রংপুর মেডিকেলে। আমি তার সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাস বন্ধ থাকায় যেতে পারছি না।'

গাইবান্ধা বাস টার্মিনালের রংপুরগামী এক বাসের চালকের সহকারী জাকারিয়া হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রংপুরে বিএনপির সমাবেশের জন্য বাস বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে উপরমহল থেকে। তাই কোনো বাস যাচ্ছে না রংপুর।'

দুইদিন বাস বন্ধ থাকলে জাকারিয়ার পরিবারে সমস্যা হবে বলেন জানান তিনি।

এদিকে বগুড়া থেকেও কোনো বাস ছেড়ে যায়নি রংপুরের উদ্দেশে।

আজ দুপুরে সরেজমিনে বগুড়া বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায় রংপুরগামী শত শত বাস টার্মিনালে আছে। অনেক বাসের চালক ও পরিবহন কর্মীদের টার্মিনালে অলস সময় কাটাতে দেখা যায়।

সাইফুল ইসলাম নামের এক বাসচালক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কাল রাতে ঘোষণা আসার পরেই বাস বন্ধ করে এখানে আছি। বিএনপির সম্মেলন শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাস রংপুর যাবে না। আগামীকালও বাস বন্ধ থাকবে।'

রুবেল আহমেদ নামের এক যাত্রী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি সরকারি চাকরি করি। ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলাম। আজ বের হয়েছি রংপুরের যাওয়ার জন্য। কিন্তু এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও বাস পাচ্ছি না। এখন অটোরিকশায় ভেঙে ভেঙে যেতে হবে।'

বাস কী কারণে বন্ধ আছে জানতে চাইলে বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা বাস বন্ধ করিনি। রংপুর বিভাগীয় মোটর মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রংপুর কোনো বাস যাচ্ছে না। তারা দুইদিন ধর্মঘট ডেকেছেন। আমরা রংপুরগামী বাস আপাতত বন্ধ রেখেছি।'

বাস বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি মকবুল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রংপুর বিভাগীয় নেতারা শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সে কারণে কোনো বাস গাইবান্ধা থেকে রংপুর যায়নি।'

ধর্মঘটের কারণ জানতে চাইলে মকবুল হোসেন বলেন, 'মহাসড়কে রিকশা, ভ্যান, অটো, থ্রি হুইলার বন্ধের দাবিতে এই ধর্মঘট ডেকেছেন বিভাগীয় নেতারা।'

Comments

The Daily Star  | English

The psychological costs of an uprising

The systemic issues make even the admission of one’s struggles a minefield

13h ago