বাংলাদেশ

খাদ্যপণ্য উৎপাদনে যুবকদের এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, খাদ্যপণ্য উৎপাদন-প্রক্রিয়াজাতে আমরা যেমন দেশের চাহিদা মেটাতে পারবো, আবার অনেক দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশকে আমরা সহযোগিতাও করতে পারবো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

খাদ্যপণ্য উৎপাদন-প্রক্রিয়াজাতকরণে যুবকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, অনেক উন্নত দেশে অর্থনৈতিক মন্দা বিরাজমান। সেই অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত রাখতে হলে আমাদের প্রতি ইঞ্চি জমিতে যেমন আবাদ করতে হবে, তাছাড়া খাদ্যপণ্য উৎপাদন-প্রক্রিয়াজাত করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। যুব সমাজকে আহ্বান করবো, তারা যেন আরও উদ্যোগ নেয়।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, খাদ্যপণ্য উৎপাদন-প্রক্রিয়াজাতে আমরা যেমন দেশের চাহিদা মেটাতে পারবো, আবার অনেক দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশকে আমরা সহযোগিতাও করতে পারবো।

আজ মঙ্গলবার সকালে জাতীয় যুব দিবস-২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবকদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির দিকেই আমাদের দৃষ্টি। তাদের মধ্যে যে নেতৃত্বের গুণাবলী আছে সেগুলো যাতে বিকশিত হয়। তাদের প্রতিভা ও মনন যাতে বিকশিত হয় এবং তাদের কর্মক্ষমতা যেন দেশের কাজে লাগে, তাই বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছি প্রতি জেলা-উপজেলায় যুব কাউন্সিল গঠন করা হচ্ছে। তার মাধ্যমে তাদের একত্রিত করে, তারা যেন কাজ করতে পারে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে সে পদক্ষেপটাই নেওয়া হয়েছে।

আমরা মনে করি, একটি প্রশিক্ষিত যুব শ্রেণি গড়ে তোলা একান্তভাবে অপরিহার্য। আজকে আমাদের দেশে কত প্রশিক্ষিত যুব শ্রেণি রয়েছে তার একটি ডেটাবেজ তৈরি করার পদক্ষেপ চলছে। সেটা হলে আমরা জানতে পারবো কর্মসংস্থান কাদের হয়েছে আর কাদের হয়নি। সেভাবে যারা কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে না, তারাও যাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ পায় সেই ব্যবস্থাটাও আমরা নিতে চাই, বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের সব থেকে বড় শক্তি হলো যুব সমাজ। আজকে পৃথিবীর অনেক দেশ বয়ঃবৃদ্ধের দেশ হয়ে গেছে। এখনো বাংলাদেশে আমাদের কর্মক্ষম যুবক শ্রেণি রয়ে গেছে এটা আমাদের বিরাট শক্তি। এই শক্তিটাই আমাদের যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে। সে কথা মাথায় রেখে বিগত নির্বাচনে অর্থাৎ ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমরা যে ইশতেহার ঘোষণা করেছিলাম, সেখানে যুবকদের জন্য আমরা আলাদা একটি কলামই রাখি। আমাদের স্লোগান ছিল তারুণ্যের শক্তি, বাংলাদেশের সমৃদ্ধি। অর্থাৎ তারুণ্যের শক্তিটা কাজে লাগিয়ে আমরা আগামী দিনের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।

আমাদের বর্তমান অবস্থার কথা বিবেচনা করে অর্থাৎ কোভিড-১৯ এর অভিঘাত; করোনাভাইরাসের কারণে আজকে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, তার ওপর ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ। এই যুদ্ধের ফলে পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো অর্থনৈতিকভাবে পর্যুদস্ত। সে ক্ষেত্রে আমাদের দেশে যেহেতু যুব সমাজ শক্তিশালী, তাদের আমি আহ্বান করবো; বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা বলছে সারা বিশ্বব্যাপী আগামীতে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। খাদ্যাভাব দেখা দেবে। অনেক উন্নত দেশে অর্থনৈতিক মন্দা বিরাজমান। সেই অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত রাখতে হলে আমাদের প্রতি ইঞ্চি জমিতে যেমন আবাদ করতে হবে, তাছাড়া খাদ্যপণ্য উৎপাদন-প্রক্রিয়াজাত করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। যুব সমাজকে আহ্বান করবো, তারা যেন আরও উদ্যোগ নেয়। যার যার এলাকাভিত্তিক কাজ করতে পারেন। খাদ্যপণ্য উৎপাদন-প্রক্রিয়াজাতে আমরা যেমন দেশের চাহিদা মেটাতে পারবো, আবার অনেক দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশকে আমরা সহযোগিতাও করতে পারবো। কারণ আমাদের মাটি অত্যন্ত উর্বর। আর আমাদের সব থেকে বড় হলো জনশক্তি, সেটাকেই আমাদের কাজে লাগাতে হবে, বলেন তিনি।

যুবকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা আমাদের দেশ দিয়ে গেছেন। সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমাদের দেশ গড়তে হবে। মনে রাখতে হবে, ১৯৭১ সালে আমাদের যুবকরাই অস্ত্র হাত নিয়েছিল। যার যা কিছু ছিল তাই নিয়ে কিন্তু এ দেশে আমাদের শত্রু মোকাবিলা করে বিজয় অর্জন করেছিল। কাজেই সেই বিজয়ী জাতি আমরা, বিজয়ী জাতি হিসেবে আমাদের সব সময় মাথা উঁচু করে চলতে হবে। কারো কাছে হাত পেতে না, মাথা নিচু করে না। আমরা নিজের দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করবো নিজের শক্তি, মেধা সম্পদ দিয়ে। এই চিন্তাটা আমাদের যুবকদের সব সময় থাকতে হবে যে, আমরা বিজয়ী জাতি। বিজয়ী জাতি হিসেবে, বিজয়ীর বেশে বিশ্বে আমাদের অবস্থা করে নেব। সেই চেতনা নিয়ে চলতে অবশ্যই বাংলাদেশকে আর কেউ পিছিয়ে রাখতে পারবে না। জাতির পিতার ভাষায়, দাবায়া রাখতে পারবে না।

Comments